
দেশের বিভিন্নস্থানে ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনিতে একাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের সব ইউনিটকে সর্তক থাকার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। রোববার এআইজি (অপারেশনস) সাঈদ তারিকুল হাসান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠিটি পুলিশের সব ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গণপিটুনি দিয়ে হত্যা এবং গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা ফৌজদারি অপরাধ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে—সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক, গভর্নিং বডির সদস্য এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা, অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ছুটির পর ছাত্র-ছাত্রীদেরকে তাদের অভিভাবকদের মাধ্যমে স্কুল ত্যাগের বিষয়টি শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নিশ্চিত করা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে ও আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি স্থাপন এবং সচল রাখার উদ্যোগ গ্রহণ।
জনসচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিটি এলাকায় ছেলেধরা সংক্রান্ত গুজবে কান না দিতে এবং পুলিশকে তাৎক্ষণিক জানানোর জন্য মাইকিং করা, লিফলেট বিতরণ ও পোস্টারিং করা।
এলাকার জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, সুধীসমাজ, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের প্রতিনিধি এবং জনসাধারণকে নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ছেলেধরা সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার বিষয়ে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করা।
প্রতিটি মসজিদের ইমামের মাধ্যমে ছেলেধরা সংক্রান্ত বিভ্রান্তি সৃষ্টি রোধকল্পে বক্তব্য দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। মেট্রোপলিটন ও জেলা শহরে অবস্থিত বস্তি এলাকায় বিশেষ নজরদারি রাখা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মনিটরিং সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে (ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ব্লগ এবং মোবাইল ফোন) ছেলেধরা সংক্রান্ত বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ও পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, গুজবে কান না দিয়ে এবং ছেলেধরা বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে, জনসাধারণের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া, স্থানীয় স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোতে সার্বক্ষণিক তা প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ডিএমপি কমিশনার, এআইজি মিডিয়া এবং সব পুলিশ সুপার জরুরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।