দীর্ঘ ১০ মাস বন্ধ থাকার পর টেকনাফ থেকে ৬১০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্ট মার্টিন গেল পর্যটকবাহী দুইটি জাহাজ এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস। আজ শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে পর্যটকবাহী জাহাজ দুটি ছেড়ে যায়। দুপুর ১২টার দিকে জাহাজগুলো দ্বীপে পৌঁছায়।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) এ মৌসুমে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে পরীক্ষামূলকভাবে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমোদন দেয় প্রশাসন। সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করেছিল।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু সুফিয়ান সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পরীক্ষামূলকভাবে দুইটি জাহাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস ৬১০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রওনা দিয়েছে। এই দুইটি জাহাজ চলাচলে পরিস্থিতি ইতিবাচক পেলে পরদিন থেকে চলাচলের জন্য অন্যান্য জাহাজগুলোকে অনুমতি দেওয়া হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাফ দমদমিয়া পর্যটকবাহী জাহাজের জেটিঘাটে টিকিটের জন্য ভিড় করেন ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। পর্যটকরা টেকনাফ পৌঁছার পথে সড়কের বেহাল অবস্থা তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানান, শতাধিক পর্যটক টিকিট না পাওয়ায় দ্বীপে ভ্রমণে যেতে পারেননি।
জাহাজ মালিক সমিতির সংগঠন স্কোয়াবের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, অনুমতি পাওয়ায় আজ শুক্রবার প্রথম দিন এমবি পারিজাত ও রাজহংস নামের দুটি জাহাজ দমদমিয়া ঘাট থেকে পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। পরশু থেকে কেয়ারি সিন্দাবাদসহ অনুমতি পাওয়া অন্যান্য জাহাজগুলো চলাচল করবে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো পর্যটকদের উন্নতমানের সেবা দিতে। তবে এবার তেল থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম বাড়তি হওয়ায় টিকিটের দাম একটু বাড়ানো হয়েছে।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক লামিয়া মুনতাহা বলেন, অনেকদিন ধরে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু টিকিট ও টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল না করায় যেতে পারিনি। অবশেষে আজ সেন্ট মার্টিন যাচ্ছি।
আরেক পর্যটক কামরান বলেন, প্রথমবার সেন্ট মার্টিন যাচ্ছি, অনেক ভালো লাগছে। মনে করেছিলাম ডিসেম্বরে যাব কিন্তু টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল না করায় একটু বিলম্ব হল। তারপরও যেতে পারছি সেটা অনেক আনন্দের।
উল্লেখ্য, নাব্যতা সংকটের কথা বলে পর্যটন মৌসুমের শুরুতে (অক্টোবর) টেকনাফের দমদমিয়া ঘাট থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি মিলেনি। কিন্তু কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, বেওয়ান ও বার আউলিয়া নামের তিনটি জাহাজ চলাচল করে। এই তিন জাহাজে পর্যটক হয়রানি সীমা ছাড়িয়ে যায়। অভিযোগ উঠে, এই তিন জাহাজের সংশ্লিষ্টরা ষড়যন্ত্র করে নাব্যতা সংকটের অজুহাত তুলে টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল করতে দেয়নি।