আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও নির্বাচনে বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সচেতনভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এটা তাদের পুরনো লক্ষ্য। সেজন্য তারা ২০১৪ সালের নির্বাচনকে সম্পূর্ণ প্রহসনে পরিণত করেছিল। এতে জনগণ কেন্দ্রে ভোট দিতে যায়নি।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের নতুন কমিটির উদ্যোগে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ তো নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রকে ধ্বংসের মাধ্যমে তারা তাদের পুরনো লক্ষ্য এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেই লক্ষ্যে ২০১৪ সালে নির্বাচনকে সম্পূর্ণভাবে প্রহসনে পরিণত করেছিল। ২০১৮ সালে আগের রাতে ভোট দিয়ে তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করেননি। এমনকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও জনগণ অংশগ্রহণ করছে না, ভোট দিতে যাচ্ছে না।
ফখরুল বলেন, জনগণ খুব সহজেই বুঝে, গোটা বিশ্ব বুঝে এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো দিনই অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। জনগণ সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। সেই কারণে আজকে আওয়ামী লীগ এসমস্ত কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়।
তিনি বলেন, এবার জনগণ জেগে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি জনগণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদের (সরকার) পরাজিত করবে এবং সত্যিকার অর্থে একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি- কোনো রকমের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমরা যাচ্ছি না। বিশেষ করে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। মেয়র কিংবা কমিশন নির্বাচনে আমাদের দলের কোনো অংশগ্রহণ থাকবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে হরণ করে নেওয়া হয়েছে। যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে, জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করে, অস্ত্রের মুখে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে এই সরকার।
ফখরুল বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য, সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে স্বেচ্ছাসেবক দল যেন তাদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারে। আন্দোলন যেন সফল করতে পারে। ইতোমধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন শহীদ হয়েছেন। ভোলায় আব্দুর রহিমের আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়। তাদের রক্ত যেন বৃথা না যায়, সেজন্য তারা শপথ নিয়েছেন। আন্দোলনকে আরও তীব্র বেগবান করবে। এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি জনগণের সরকার তৈরি করবে। জনগণের রাষ্ট্র নির্মাণ করবে। একটি গণতান্ত্রিক মুক্ত সমাজ এখানে বিনির্মাণ করবে।
এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শারাফাত আলী অপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।