একটি গোষ্ঠী সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনো ভোটে পিছিয়ে ছিল না। নানা ষড়যন্ত্র করে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগকে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল।
শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। গণভবনে আয়োজিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করতে চায়। আমাদের অপরাধটা কী? আমরা কোথায় ব্যর্থ হয়েছি? জিয়া, এরশাদ, খালেদা, তারেক সবাই মানুষ হত্যা করেছে। মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে।’
জিয়াউর রহমান নির্বাচনে প্রহসন ও ভোট কারচুপির কালচার শুরু করেছিল বলেও অভিযোগ করেছেন শেখ হাসিনা।
কখনো পেছনের দরজা দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসেনি উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের দল। আওয়ামী লীগ ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে অতিজ্ঞানী হলেও তারা কম বোঝে, তাকিয়ে থাকে কখন তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে। তারা বসে থাকে, কখন সিগন্যাল আসবে। বিদেশে দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করে, বিদেশ থেকে যেন তাদের ক্ষমতায় বসাবে।
এ সময় মানুষ এবার ঈদে নির্বিঘ্নে বাড়ি গেছে ও ফিরছে জানিয়ে এর জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঈদে আমাদের দেশের মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যায়। বিশ্বে অনেক দেশে এমন রীতি কমে গেছে। তবে শহরের মানুষ গ্রামে গেলে গ্রামেও অর্থ সরবরাহ বাড়ে। গ্রামের যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হচ্ছে। আমরা তৃণমূল থেকে উন্নয়ন করছি। গ্রামীণ অর্থনীতিও শক্তিশালী করছি। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পরাধীনদের অনুসরণ করবো না। নিজস্বভাবে দেশের উন্নয়ন করবো। মাথা উঁচু করে চলবো।
আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রসঙ্গে দলের সভাপতি বলেন, আমরা নিয়মিত সম্মেলন করি। সম্মেলনের সময় কাছে আসছে। এর আগে আমরা কিছু কাজ করে থাকি। আগের ঘোষণাপত্রের অনেক কিছু বাস্তবায়ন করেছি।
আগামী জুলাই মাসে আরও ৩৪ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
ঈদুল ফিতরের আগে প্রায় ৩৩ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঈদের আগে ৩৩ হাজার ঘর দিয়েছি। জুলাই মাসে আরও ৩৪ হাজার দেব। বাকি থাকবে ৪৫ হাজার, তাও দিয়ে দিলে দেশে ভূমিহীন কেউ থাকবে না। আমরা চাই, বাংলাদেশে একটা মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
দীর্ঘদিন পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলের নেতারা।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিক বিটু বলেন, সভার শুরুতেই কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে তার ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে’ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর চিকিৎসার জন্য বিদেশ গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাধা উপেক্ষা করেই ওই বছরের ৭ মে দেশে ফিরেছিলেন তিনি।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়নি। ২০২১ সালের নভেম্বরে একটি বৈঠক হলেও তাতে স্বল্প সংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বৈঠকে করোনা টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্ট আসা দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা এতে অংশ নিয়েছেন। সর্বশেষ গত বছর ১৯ নভেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।