সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাবেক প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মৃত্যুর একদিন পরই দেশটিকে নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নিয়েছেন।
শনিবার (১৪ মে) আরব আমিরাতের দীর্ঘদিনের ডি-ফ্যাক্টো শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। আমিরাতের ফেডারেল সুপ্রিম কাউন্সিল শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে।
শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ ২০০৪ সালের নভেম্বর থেকে আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।এছাড়া দেশটির সেনাবাহিনীর ডেপুটি সুপ্রিম কমান্ডারের দায়িত্বও পালন করেন ২০০৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। তিনি কৌশলগত পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ, সাংগঠনিক কাঠামো ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতার মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সশস্ত্র বাহিনীর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
৬১ বছর বয়সী এই প্রভাবশালী নেতা দেশটির তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হলেন। আগামী পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। ১৯৭১ সালে তাঁর বাবার প্রতিষ্ঠিত তেলসমৃদ্ধ দেশটির শাসক হলেন তিনি। শেখ মোহাম্মদই নতুন প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন আগে থেকেই তা ধারণা করা হচ্ছিল। শেখ খলিফার অসুস্থতার কারণে এক কোটি মানুষের মরুভূমির দেশটি কয়েক বছর ধরে কার্যত তিনিই শাসন করছিলেন। অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে শাসক হিসেবে শেখ মোহাম্মদ দায়িত্ব নিলেন।
আরব আমিরাত তাঁর দিকনির্দেশনায় মহাশূন্যে মানুষ পাঠিয়েছে, মঙ্গলে মিশন পরিচালনা করেছে এবং দেশটির প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করেছে। একই সঙ্গে শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণে দেশটির তেলসমৃদ্ধ অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
ঐতিহ্যবাহী শক্তিগুলো পিছু হটায় এবং যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের কিছুটা গুটিয়ে নেওয়ায় বদলে যাওয়া মধ্যপ্রাচ্যে নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ মিত্র শেখ মোহাম্মদ। তিনি ইসরায়েলে সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দেন।
শেখ মোহাম্মদের সৎ ভাই শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বেশ কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। শুক্রবার ৭৩ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তিনি আমিরাতের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০০৪ সালের ৩ নভেম্বর থেকে প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি আবুধাবির শাসকের দায়িত্ব পালন করছিলেন শেখ খলিফা। ২০১৪ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তেমন জনসমক্ষে আসতেন না তিনি।
পশ্চিমা দুনিয়ায় ‘এমবিজেড’ নামে ব্যাপক পরিচিত শেখ মোহাম্মদকে আরব বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে মনে করা হয়। ব্রিটেনের রয়্যাল মিলিটারি একাডেমি স্যান্ডহার্স্টের স্নাতক এই ক্রাউন প্রিন্স উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম সেরা সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছেন।