আলু পরিবহন বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবক নিহত।
মো.আহসানুল ইসলাম আমিন :
মুন্সীগঞ্জে আলু পরিবহনের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় জুয়েল ফকির (২৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ভোর রাত ৪টার দিকে জেলার সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমশুরা ফকিরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৫টি ঘরে ভাংচুর চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে , দুই পক্ষই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. আফসারউদ্দিন ভুইয়া এবং একই কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান জীবন দুই পক্ষকে আশ্রয় দিচ্ছেন। চলতি মৌসুমের উত্তোলন করা আলু পরিবহনের ট্রলি চালানোর আধিপত্য নিয়ে চরকেওয়ার ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মন্টু দেওয়ানের ভাই ঝন্টু দেওয়ানের সঙ্গে একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি হারুন ফকিরের মধ্যে কয়েকদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে ঝন্টু দেওয়ান গ্রুপ বৃহস্পতিবার ভোররাতে হামলা চালিয়ে জুয়েল ফকিরকে হত্যা করে বলে স্বজনদের অভিযোগ।
( ছবিঃ নিহত যুবক জুয়েল ফকির )
নিহত ব্যক্তির স্বজনরা জানান, ট্রলিতে আলু উঠানো-নামানোকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ ইউপি সদস্য মন্টু দেওয়ানের ভাই ঝন্টু দেওয়ান, দেলোয়ার, নান্নু হাজী ও মাসুদ গংরা ভোর রাতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ সময় জুয়েল ফকির হামলার ভয়ে মসজিদে আশ্রয় নিতে গেলে হামলাকারীরা তাকে ধরে কৃষি জমিতে নিয়ে গুলি করে ও চোখ উপড়ে ফেলে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ গুম করার চেষ্টাকালে বেশ কয়েকজন নারী জুয়েল ফকিরের নিথর দেহ ছিনিয়ে নিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
জুয়েলের চাচাত ভাই ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. হারুন ফকির বলেন, আলু বহনের ট্রলির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে ইউপি সদস্য মন্টু দেওয়ান ও তার ভাই ঝন্টু দেওয়ানের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। এ কারণে আমার লোকজনকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। আলু পরিবহন বাণিজ্যের একক নিয়ন্ত্রণ নিতে আমার ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চরকেওয়ার ইউনিয়নের ৮ নম্বর ইউপি সদস্য মো. মন্টু দেওয়ান মুঠোফোনে বলেন, প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসাতে হত্যার সঙ্গে জড়িয়ে নানা অভিযোগ তুলছে। এলাকায় গেলে জানতে পারবেন ফকির ফকির গ্রুপ ও ঢালী গ্রুপের বিরোধের ঘটনায় আমাকে উদ্দেশ্যেমূলক জড়ানো হচ্ছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, পূর্বশত্রুতাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে নিহত জুয়েল ফকিরের পায়ে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। গুলিতে নিহত হয়েছে কিনা তা ময়নাতদন্তে পরে জানা যাবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।