বিশ্বিবদ্যালয় প্রতিবেদক
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ফরিদুর রহমান। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ধর্ষণের অভিযোগ প্রচার হওয়ার পরেও বহাল তবিয়তে কর্মরত রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। জানা যায়, কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকার তার পাঁচতলা বিশিষ্ট ভবন রয়েছে। ওই ভবনের প্রথম তলায় বাসা ভাড়া নিয়েছিলো এক তরুণী। তবে ভাড়ার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় অভিযুক্ত ফরিদুর কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয় ওই তরুণী। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পরও টনক নড়েনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এর ফলে কর্মচারীদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মনে দিন দিন ক্ষোভ জমা হচ্ছে। এর জেরে যেকোনো সময় আরও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে, যা সুশীল সমাজের কাম্য নয়।
অভিযোগকারী সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক সমস্যার কারণে গত ঈদ-উল-ফিতরের পর ভবনের প্রথম তলায় ভাড়ায় ওঠেন ওই তরুণী (২৪)। এদিকে স্ত্রী ছাড়াই বাসার তৃতীয় তলায় থাকতেন অভিযুক্ত ফরিদ। স্থানীয় একটি কাঠের দোকান থেকে ফরিদুর রহমানের সাথে তার পরিচয়। তার অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে অভিযুক্ত ফরিদ তার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠতে বলেন। মাস শেষে ভাড়ার টাকা পরিশোধ করা হবে এমন শর্তে ওই তরুণী তার বাড়িতে উঠার অঙ্গিকার করে। পরে বাড়িতে উঠার পর থেকে তিনি অগ্রীম ভাড়ার টাকার জন্য নিয়মিত চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু ভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় তরুণীর রুমে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন ওই তরুণী।
ওই তরুণীর অভিযোগ, বাসায় উঠার আগেই বাড়ির মালিককে বলে নিয়েছিলাম আমার আর্থিক সমস্যা রয়েছে। এজন্য মাস শেষে ভাড়া পরিশোধ করব। কিন্তু বাসায় উঠার পর তিনি কোনভাবেই তা মেনে নিচ্ছিলেন না। পরে বললাম আপনি আমার মালপত্র রেখে দেন আমি ভাড়া পরিশোধ করে পরে মালপত্র নিয়ে যাবো। কিন্তু উনি আমাকে যেতেও দিবেন না। তিনি আমাকে প্রায়ই বলতেন তোমাকে ভালো লেগেছে। একদিন দরজা খোলা পেয়ে তিনি ভিতরে প্রবেশ করে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন এবং বলেন তোমাকে ভাড়া পরিশোধ করা লাগবে না।
তিনি আরও জানান, এভাবে প্রায় মাসখানেক ধরে প্রতিনিয়ত আমাকে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত ফরিদ। বিষয়টি প্রকাশ না করতে নানারকম ভয়ভীতি ও বাসায় বলে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন। পরে আমি উপায় না পেয়ে ফোন বিক্রি করে ভাড়া পরিশোধ করে অন্যত্র চলে যায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ফরিদুর রহমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মেয়েটি সময়মতো ভাড়া দিতো না এবং ভাড়া কম দিতো। যার জন্য তাকে বাসা ছাড়তে বলি। এসব কারণে সে এমন টালবাহানা মার্কা কথা বলেছে এবং আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।’
এ বিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলম জানান, ঘটনাটি যদি সত্য হয়ে থাকে অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা কখনোই কোনো অভিযোগকারীর পক্ষ নিবো না।
এদিকে এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে পত্রপত্রিকার মাধ্যমে দেখেছি। ঘটনাটি সত্য হলে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।’