লেবাননের ইরানপন্থি সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে হিজবুল্লাহ। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ সংগঠনটির মহান ও অমর শহীদ কমরেডদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন; যাদের তিনি ৩০ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
এর আগে, হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার দাবি করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৫৭ মিনিটে সামাজিকমাধ্যম এক্সে হিজবুল্লাহ প্রধানকে হত্যার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় তারা। তারা জানায়, বৈরুতে চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন হাসান নাসরুল্লাহ।
শুক্রবার বৈরুতের দাহিয় এলাকায় তীব্র বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর সদর দপ্তরে সংগঠনটির প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে লক্ষ্য করেই এই বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল বলে ধারণা করা হয়। এরপর যত সময় গড়ায় ততই তার নিহত বা আহত হওয়ার বিষয়টি জোরালো হয়।
তবে হামলায় হাসান নাসরুল্লাহর ভাগ্যে কী ঘটেছে, তাৎক্ষণিকভাবে হিজবুল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, কোনো বিবৃতি দেয়নি। অবশেষে আজ রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
হাসান নাসরুল্লাহ ৩২ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়ে হিজবুল্লাহকে আজকের সুসংহত অবস্থানে এনেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রভাব ব্যাপক। ফিলিস্তিন ভূখণ্ড গ্রাস করার ইসরায়েলের খায়েশ পূরণে অন্যতম বাধা হাসান নাসরুল্লাহ ও তার বাহিনী।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মাথাব্যথার অন্যতম কারণ ছিলেন হাসান নাসরুল্লাহ। ইসরায়েলি বিমান হামলায় তার নিহত হওয়া এ যাবৎকালে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বিজয়। অন্যদিকে হিজবুল্লাহ প্রধানের মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বড় শক্তি ইরানের জন্য বিরাট আঘাত। কারণ, এ অঞ্চলে ইরানের সবচেয়ে বিশ্বস্থ বন্ধু ছিলেন নাসরুল্লাহ।
এদিকে হিজবুল্লাহ প্রধানের নিহতের এ সংবাদ হিজবুল্লাহ এবং তার অনুসারীদের জন্য অত্যন্ত শোকের এবং মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের চলমান সংঘর্ষের মধ্যে নাসরুল্লাহর মৃত্যু এ অঞ্চলে নতুন করে সংঘাতের সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।