বিশেষ প্রতিনিধিঃ
বান্দরবান জেলার লামা উপজেলাধীন আজিজনগর ইউনিয়নে ভূয়া সাংবাদিকের ভরপুর। পেশা পরির্বতন করেই হয়ে যান সাংবাদিক। কোন সংবাদ লিখতে না পারলেও তারা বড় সাংবাদিক। বিভিন্ন পত্রিকা পকেটে নিয়ে ও অনুমোদনহীন অনলাইন নিউজ পোর্টালের নাম লেখা ষ্টিকার গাড়িতে লাগিয়ে অবাধে চলাচল করছে ওইসব সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তি। পাহাড় কাটা, গাছ কাটা, অবৈধ বালি উত্তোলন, চোলাই মদ পাচার, বাল্যবিবাহ, মারামারি, স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া, পরকিয়া ও বিভিন্ন অনিয়মের খোঁজ নিয়ে পৌছে যান সকলে আগে। সেখানে তাদের নানা রকম ভয়ভীতি প্রর্দশন করে আদায় করে থাকে মোটা অংকের টাকা। টাকা দিতে না চাইলে পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়ে থাকে তারা। নেই কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা,
তেমন একজন ভুয়া সাংবাদিক ও মাদক মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন রাজীব। সে ৪নং আজিজনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পাড়ার এনায়েত এর পুত্র। তাকে ২০১৬ সালে তাদের বাড়ি থেকে ৭৯ পিছ ইয়াবাসহ আটক করেছিল আজিজনগর ক্যাম্প পুলিশ। তখন তার নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০ এর ১৯(১) এর জি,আর ১৯/২০১৬ মামলা করে লামা থানা পুলিশ। যে মামলা এখনো বান্দরবান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিট্রট আদালতে চলমান রয়েছে। বর্তমানে সে টাকার বিনিময়ে “অনলাইন তালাশ পর্ব-২১ ” নামে অনুমোদনহীন একটি নিউজ পোর্টালে কার্ড ক্রয় করে দক্ষিণ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি দাবি করে মাদক পাচার, বিক্রি ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে। আজিজনগর ইউনিয়নটি তিন জেলার সামান্তবর্তী হওয়ায় পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন রিজার্ভ এলাকায় বাড়ি, ঘর নির্মাণ করলে চাঁদা দিতে বাধ্য করে এ ভুয়া সাংবাদিক। যদি কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করে তখন বনবিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের দিয়ে বাড়ি ঘর ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে।
আব্দুল খালেক নামে এক ভোক্তভোগি জানান, আমি বান্দরবান জেলার লামা উপজেলাধীন আজিজনগর ইউনিয়নে নিজেদের জায়গাতে বাড়ি নির্মাণ করলে কথিত সে ভুয়া সাংবাদিক চুনতি বনরেঞ্জের আওতাধীন হারবাং বিটের অধীনে বাড়ি নির্মাণ করছি বলে হারবাং বিটের দায়িত্বরত বিটকর্মকর্তা, চুনতি রেঞ্জ অফিসার শাহিনুর রহমানকে আমার বাড়ি ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য বনবিভাগের অফিসে গিয়ে এবং মোবাইলে নানা রকম মিথ্যা তথ্য প্রদান করে যা প্রমাণ স্বরুপ আমার কাছে রয়েছে। চাঁদা দাবির বিষয়ে তিনি আরো জানান, আমার বিরুদ্ধে বনবিভাগে মিথ্যা তথ্য প্রদান বিষয়ে আমার নজরে আসলে তার বাবাকে ফোন করে সর্ম্পূন বিষয় বলি তার কিছুদিন পর কথিত সে ভুয়া সাংবাদিক তার ছেলে অসুস্থ বলে আমার কাছ থেকে ১০০০ টাকা নেয়।
এ বিষয়ে হারবাং বিটকর্মকর্তা, চুনতি রেঞ্জ অফিসার শাহিনুর রহমানকে জানতে চাইলে তিনি জানান, রাজীব নামে এক ব্যক্তি হারবাং বিটের অধীনে সরকারি জায়গাতে আব্দুল খালেক নামে এক ব্যক্তি বাড়ি নির্মান করছে বলে আমাকে অভিযোগ দেয়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে জানতে পারি বাড়ি নির্মাণের জায়গাটি বান্দরবান জেলাধীন আজিজনগরে ইউনিয়নে। আব্দুল খালেকের নির্মাণধীন বাড়িটি বান্দরবান জেলায় পড়েছে জানালে অভিযোগকারী রাজীব আমাকে আব্দুল খালেক অনেক টাকার মালিক রয়েছে বলে জানান এবং তার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে দেওয়ার জন্য আমার কাছে অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য আজিজনগর ইউনিয়নেই অনুমোদনহীন অনলাইন নিউজ পোর্টাল অনলাইন তালাশ এ ৪ জন প্রতিনিধি রয়েছে। তারা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের নানা রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদাবাজি করে থাকে।
ইয়াবা মামলার আসামীকে কিভাবে প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন জানতে চাইলে অনলাইন তালাশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক পারভেজ আহমেদ বলেন, মামলার বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। যদি কোন প্রতিনিধির বিরুদ্ধে মামলা থাকে তাহলে অফিস কর্তৃপক্ষ তার সংশ্লিষ্ট থানায় খবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।