প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়ায় দেশের পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। একরাতের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে কেজি প্রতি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। আর ভারতীয়টার দামও দুশো’ ছুঁয়েছে। পেঁয়াজের বাজারের এমন অস্থিতিশীলতায় দিশেহারা অবস্থা ক্রেতাদের। খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের ধারণা, আগামী দুই দিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকা বা তারও বেশি হতে পারে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজারে ঘুরে দেখা যায়, কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজের দাম গিয়ে ঠেকেছে প্রায় দ্বিগুণ দামে। খুচরায় গতরাতে ১২০-১৩০ টাকায়ও মিলেছে দেশি পেঁয়াজ। রাত গড়াতেই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০-২২০ টাকা। আর ১০২-১০৩ টাকা কেজি দরের ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাদের এখন গুনতে হচ্ছে দুশো টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এজন্য পাইকাররা দেশি পেঁয়াজ ছাড়ছেই না। কারওয়ান বাজার, শ্যামবাজারেও ভোরে যে দাম ছিল, সকাল ৯টায় তা মণপ্রতি ৮০০-১০০০ টাকা বেড়ে গেছে। বিকেল নাগাদ বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে- এমন আশঙ্কা ক্রেতাদের।
মোহাম্মদপুর বাজারের ব্যবসায়ী সজিব মিয়া বলেন, ভোরে কারওয়ান বাজার থেকে বহু কষ্টে চার মণ পেঁয়াজ এনেছি। আমি পাইকারিতে কিনেছি ৭ হাজার টাকা মণ দরে। আনতে খরচ পড়ছে আরও ৫০০ টাকা। এখন ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি না বিক্রি করলে লোকসান হবে।
একরাতের ভেলকিতে পেঁয়াজের এমন দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ক্রেতারাও। তারা বলছেন, পেঁয়াজের বাজারে ঠাডা পড়ছে। না হলে এক রাইতে ১২০ টাকার পেঁয়াজ ২০০-২২০ টাকার বেশি হয় ক্যামনে। দোকানে এখনও যে পেঁয়াজ আছে এগুলা তো আগের কেনা।
দেশের কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র অনুসারে, গত ২ বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টন। দুই বছরে আগে যেখানে উৎপাদন হতো ২৫ লাখ টনের মতো, এখন উৎপাদন হচ্ছে ৩৫ লাখ টন। পেঁয়াজের সংগ্রহ থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পণ্যটি পৌঁছাতে বিভিন্ন ধাপে অপচয় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাদে গত বছর নিট উৎপাদন হয়েছে ২৪ দশমিক ৫৩ লাখ টন। বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ লাখ টন। এই চাহিদা মেটাতে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৬৫ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়।