বোনের বিয়ের জন্য দুবাই প্রবাসী বড় ভাই নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল কিনে পাঠান আরেক প্রবাসীর মাধ্যমে। কিন্তু তা পরিবারকে বুঝিয়ে না দিয়ে ফাঁকি দিয়ে বগুড়ায় নিজ বাড়িতে চলে যান ওই প্রবাসী। স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল বিক্রি করে নিজের জন্য তৈরি করে একতলা দালান, কেনেন দামি মোটরসাইকেল।
এদিকে বিয়ে ভেঙে যায় মেয়েটির। স্বপ্ন ভাঙে পরিবারের। এ ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী কন্যার বাবা।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আত্মসাৎ করা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রোববার নিজ কার্যালয়ে কনের বাবা-মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ডিবি দক্ষিণ) সঞ্জিত কুমার রায়, গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মো. ফারুক হোসেন বলেন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া বিয়ের কনের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে। ভালো পাত্র পেয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করেন তার অভিভাবক। দুবাই প্রবাসী বড় ভাই বোনের জন্য স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন কেনেন আর হবু জামাইয়ের জন্য কেনেন আইফোন।
পরিচিত আরেক দুবাই প্রবাসীকে দুবাই থেকে ঢাকাগামী বিমানের টিকিট কেটে কাস্টমসের জন্য ১৪৫০ দিরহাম দিয়ে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন বোনের কাছে পৌঁছে দিতে তার কাছে বুঝিয়ে দেন।
নির্দিষ্ট দিনে বিমানবন্দরে মালামাল গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন কনের বাবা। কিন্তু প্রতারক প্রবাসী ফাঁকি দিয়ে চলে যান বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে। সব বিক্রি করে দিয়ে নিজের জন্য তৈরি করে একতলা দালান, কেনেন দামি মোটরসাইকেল। এদিকে বিয়ে ভেঙে যায় মেয়েটির। আর স্বপ্ন ভাঙে পরিবারের। এ ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী কন্যার বাবা।
অভিযোগ পাওয়ার পর ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন জোড়া লাগাতে কাজ শুরু করে পুলিশ। ডিএমপির গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের একটি টিম উদ্ধার করে স্বর্ণালংকার বিক্রির নগদ টাকা, দুটি মোবাইল ফোন এবং পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার। এরপর আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে রোববার এ মালামাল বুঝিয়ে দেয়া হয়। মালামাল কনের বাবা-মা বুঝে পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।