খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিসি) লাবনী আক্তারের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ও মাহমুদুল হাসান নামের এক কনস্টেবলের মাথায় গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়ার বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে। পুলিশ বলছে, দুজনই আত্মহত্যা করেছেন। তবে একদিনে দুজনের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন জাগছে মানুষের মনে।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সারঙ্গদিয়া গ্রামের নানাবাড়ি থেকে লাবনীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর বুধবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে মাহমুদুল হাসানের মরদেহ পাওয়া যায় মাগুরা পুলিশ লাইন্স ব্যারাকের ছাদে।
লাবনীর মরদেহ উদ্ধারের অল্প সময়ের ব্যবধানে মাগুরায় পুলিশ ব্যারাকের ছাদে কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানের মরদেহ পাওয়া যায়। কনস্টেবল মাহমুদুল হাসান খুলনায় লাবনীর সাবেক দেহরক্ষী ছিলেন। মাস দেড়েক আগে তাকে খুলনা মাগুরায় বদলি করা হয়।
লাবনীর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার শফিকুল আজম (অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) জানান, ১৭ জুলাই এক সপ্তাহের ছুটিতে লাবনী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে। গ্রামের বাড়িতে এসে সে শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের সারঙ্গ দিয়া গ্রামে নানাবাড়িতে ছিল। বুধবার রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। সকালে ডাকাডাকির পরও দরজা না খোলায় দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, তার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে এটা তিনি ভাবতেও পারছেন না। তবে স্বামীর সঙ্গে (বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক তারেক আব্দুল্লা) লাবনীর সম্পর্ক খুব খারাপ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে ঝাগড়াঝাটি লেগেই থাকতো। লাবনীর বাবার দাবি, স্বামীর সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের জেরে লাবনী আত্মহত্যা করেছে।
অন্যদিকে, পুলিশ কনস্টেবল মাহামুদুল হাসানের বাবা (চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত পুলিশের কনস্টেবল) এজাজুল হক খান জানান, ঘটনার আগের রাতেও ফোনে তাদের কথা হয়। মাহামুদুল যে খুলনায় এডিসি লাবনী আক্তারের দেহরক্ষী ছিল এটাও তার মৃত্যুর পর জানতে পারেন তিনি। মাহামুদুল কেন অত্মহত্যা করেছেন সে বিষয়ে তিনি বলতে পারেননি।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান জানান, বুধবার রাতে ডিউটি শেষ করে মাহমুদুল হাসান পুলিশ লাইনের ব্যারাকে ফিরে যান। রাতের কোনো এক সময় তিনি ব্যারাকের ছাদে উঠে নিজের নামে থাকা অস্ত্র দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন বলে শুনেছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
মাগুরার পুলিশ সুপার জহিরুর ইসলাম জানান, এ বিষয়ে মাগুরা থানা ও শ্রীপুর থানায় দুটি ইউডি মামলা হয়েছে। ঘটনার কারণ উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। লাবনী আক্তারের পারিবারিক কলহ ও একই দিনে সাবেক দেহরক্ষী মাহমুদুল হাসানের আত্মহত্যার বিষয়সহ সব দিক মাথায় রেখে এগিয়ে যাচ্ছে তদন্তকাজ।