ভারতে অনুষ্ঠিত আইসিসি ওডিআই বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে দ্বিতীয়বারের মত বড় কোনো অঘটনের জন্ম দিলো আফগানিস্তান। তাদের চেয়ে শক্তি, সামর্থ ও যোগ্যতা সবদিক থেকে এগিয়ে থাকা পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে রেকর্ডের জন্য দিয়েছে দলটি। ছয় বল বাকি থাকতে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্য পার করে বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে হাসমতউল্লাহ শহিদীর দল।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে হয় ম্যাচটি।
আফগানিস্তানের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। ম্যাচের শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। এরপরই ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়াতে থাকেন এ দুই ওপেনার। ম্যাচের ১৫তম ওভারে উসামা মীরের বলটি লং অফে ঠেলে অর্ধ শতক পূর্ণ করে ইব্রাহিম জাদরান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি করে তিনি খেলেন ৫৪ বল।
ইব্রাহিমের পর ফিফটি হাঁকিয়েছেন আরেক আফগান ওপেনার গুরবাজও। ৩৮ বলে অর্ধ শতক তুলে নেন তিনি। অবশ্য ফিফটির ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। আফ্রিদির বলে উসামার তালুবন্দী হওয়ার আগে ৬০ করেন এ ব্যাটার। এরপর বাইশ গজে আসেন রহমত শাহ। তার সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন ইব্রাহিম। কিন্তু সেঞ্চুরির পথে এগোতে থাকা ইব্রাহিমকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন হাসান আলী।
পরে ক্রিজে আসেন আফগান দলপতি হাশমতউল্লাহ শাহিদী। তাকে সঙ্গে নিয়ে নিজের ব্যাক্তিগত ৪৮ রান ও রহমত শাহের ৭৭ রানে ৬ বল বাকি থাকতেই ২৮৬ রান করে আফগানিস্তান। ম্যাচে সর্বোচ্চ ৮৭ রান করা ইব্রাহিম জাদরান ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন।
পাকিস্তানের হয়ে একটি করে উইকেট পেয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলী।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন পাক অধিনায়ক বাবর আজম। দলের হয়ে উদ্বোধনে নামেন আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম উল হক। দু’জনের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে অষ্টম ওভারে দলীয় অর্ধশতকের দেখা পায় পাকিস্তান। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৬ রান যোগ করেন ইমাম ও শফিক।
দ্বিতীয় পাওয়ার প্লে শুরু হতেই পাক শিবিরে আঘাত হানে আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তার বলে নাভিন উল হকের তালুবন্দী হন ১৭ রান করা ইমাম। ইমাম ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন শফিক। এরপর ব্যাক্তিগত ৫৮ রানে নুর আহমেদের বলে আউট হন তিনি। এরপর উইকেটে এসে ৮ রান করে আউট হন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে সৌদ শাকিলকে নিয়ে ছোট্ট জুটি গড়েন বাবর আজম। কিন্তু সেট হওয়ার পর ড্রেসিংরুমে ফিরে যান শাকিলও (২৫)।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। সেখান থেকে বাবরের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে মেন ইন গ্রিনরা। একই সঙ্গে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩০তম অর্ধ শতক তুলে নেন বাবর। নুরের বলে আউট হওয়ার আগে ৭৪ রান করেন এ ব্যাটার। তার বিদায়ে ক্রিজে আসেন ইফতেখার আহমেদ। তবে ব্যাক্তিগত ৪০ রানে আউট হন ইফতেখার আহমেদ। সাদাব খান ফেরেন ৪০ রানে, শাহিন শাহ আফ্রিদি ৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
এদিন আফগানদের হয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন নুর আহম্মেদ, দুই উইকেট পেয়েছেন আজমতউল্লাহ ওমারজাই ও একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ নবী ও নাভান-উল-হক।