বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) পঙ্কজ দেবনাথকে আওয়ামী লীগের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অর্পিত ক্ষমতাবলে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে আওয়ামী লীগের বরিশাল জেলা শাখার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পদসহ অন্যান্য পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কার্যনির্বাহী সংসদ। এ বিষয়ে তার লিখিত জবাব ১৫ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
এমপি পঙ্কজ দেবনাথ এ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় দপ্তর থকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছি। এ বিষয়ে এই মুহুর্তে বেশি কিছু বলার নেই।’
চিঠির অনুলিপি বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুসের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে প্রায়ই পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এর জেরে সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের সময় কয়েকটি খুনের ঘটনাও ঘটে। দুই পক্ষের মধ্যে এক পক্ষে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মইদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র কামাল খান। পক্ষটি জেলা আওয়ামী লীগের সমর্থনপুষ্ট। অপর পক্ষে আছেন পঙ্কজ দেবনাথ।
সর্বশেষ ২৮ আগস্ট মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান একটি পক্ষ আরেক পক্ষকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করে। এ সময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ছয় নেতা-কর্মীকে কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত নেতা-কর্মীদের মধ্যে চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছিল। আহত নেতা-কর্মীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী। অন্যদিকে, ঘটনার অভিযুক্তরা পঙ্কজ দেবনাথের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথকে দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার একটি চিঠি তারা পেয়েছেন।
তিনি বলেন, গত চার বছরে মেহেন্দীগঞ্জে দলকে বিভক্ত করে নিজের বলয় সৃষ্টি করে পঙ্কজ দেবনাথ নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে দলীয় নেতা-কর্মীদের হত্যা, নির্যাতন, পঙ্গু করে দেওয়া, মিথ্যা মামলায় হয়রানি এবং স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপতৎপরতা চালিয়েছেন। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।