সোমালীয় জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’র ওপর নজর রাখছে একটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ। বাংলাদেশি জাহাজকে সহায়তা করতে কাছাকাছি এলাকায় ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের পাশাপাশি একটি দূরপাল্লার সামুদ্রিক টহল উড়োজাহাজও অবস্থান নিয়েছে।
শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমে এক্সের একটি পোস্টে এ কথা জানায় ভারতীয় নৌবাহিনী।
অন্যদিকে, শুক্রবার এক বিবৃতিতে ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ জিম্মি হওয়ার খবর পেয়ে উদ্ধারের জন্য লং-রেঞ্জ মেরিটাইম পেট্রোল (এলআরএমপি) বিমান মোতায়েন করে ভারতীয় নৌবাহিনী। গত ১৪ মার্চ এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি যায় এই ভারতীয় জাহাজ ও আরেকটি যুদ্ধজাহাজ। তবে পরে সরে আসতে হয়।
এতে আরও বলা হয়, এখনো সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে জিম্মি হওয়া জাহাজের বেশি দূরে নয় তাদের জাহাজ। সোমালিয়ার আঞ্চলিক জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি অবস্থানে থাকে এটি।
সোমালীয় জলদস্যুদের হাতে জিম্মিদের উদ্ধারে দুটি যুদ্ধজাহাজ প্রাথমিক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। জাহাজ দুটি এমভি আবদুল্লাহকে অনুসরণ করলে জিম্মি নাবিকদের দিকে অস্ত্র তাক করে জলদস্যুরা। ফলে সরে আসতে হয় তাদের।
তবে গারকাড উপকূলে নোঙর করা এমভি আবদুল্লাহর নাবিকেরা এখন সুস্থ আছেন। চট্টগ্রামে পরিবারের কাছে এক নাবিকের পাঠানো অডিও বার্তা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সোমালিয়ার গারকাড উপকূল থেকে প্রায় ৭ নটিক্যাল মাইল দূর সমুদ্রে নোঙর করানো হয় এমভি আবদুল্লাহকে। এসময় জলদস্যুরা জাহাজটিকে দ্বিতীয় পক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ইউরোপীয় ও ভারতীয় দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে অনুসরণ করলে জলদস্যুরা নাবিকদের মাথায় অস্ত্র তাক করে। এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়ে তারা। তাই জিম্মিদের ক্ষতির আশঙ্কায় পিছু হটে যুদ্ধজাহাজ দুটি।
পরে এমভি আবদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও ভারতীয় নৌবাহিনী সাড়া পায়নি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করেছে তারা।
এদিকে জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেলের দিকে জাহাজটির নোঙর তোলা হয়।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, সোমালিয়ার স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে জিম্মি জাহাজটিকে আগের অবস্থান থেকে সরিয়ে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে নিয়ে নোঙর করা হয়েছে।
পশ্চিম ভারত মহাসাগরে বেশ কিছু বাণিজ্য জাহাজের ওপর হামলার পর ভারতীয় নৌবাহিনী গত কয়েক সপ্তাহে ওই অঞ্চলে নজরদারি বাড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ মার্চ বাংলাদেশের এস আর শিপিংয়ের ১৩ মিটার গভীরতার জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। পরে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে খবর আসে, ভারত মহাসাগরে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে। ওই জাহাজে ২৩ জন নাবিক ছিল।