কাপ্তাইয়ে পাহাড়ি খাদ্য সংকটে লোকালয়ে হাতির বিচরণ
হাতি আমাদের দেশের অমূল্য প্রাকৃতিক সম্পদ। পাহাড়-জঙ্গলই এদের প্রধান আবাসস্থল হলেও বিগত কয়েক বছরে পাহাড়ি এলাকায় খাদ্যের মারাত্মক সংকট দেখা দেওয়ায় হাতিগুলোকে ক্রমেই লোকালয়ে বিচরণ করতে দেখা যাচ্ছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক, ক্ষয়ক্ষতি ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খাদ্যাভাবে হাতির পাল প্রায়ই গ্রামে নেমে আসে। কখনো ফসল নষ্ট করে, কখনো ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। এতে মানুষ ও হাতি উভয়ের জন্যই তৈরি হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি।
বন বিভাগের করণীয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, হাতি সংরক্ষণে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু দিবস, সেমিনার বা আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ প্রয়োজন। বন বিভাগের করণীয় বিষয়গুলো হলো—
নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করা – পাহাড়ি এলাকায় হাতির জন্য সংরক্ষিত বনভূমি ও চলাচলের করিডোর (Elephant Corridor) রক্ষা ও সম্প্রসারণ করা।
খাদ্যের ব্যবস্থা – হাতির জন্য প্রাকৃতিক খাদ্যগাছ যেমন বাঁশঝাড়, বনজ ফলের গাছ, কলাগাছ ইত্যাদি পর্যাপ্ত হারে রোপণ করা।
মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব হ্রাস – লোকালয়ে হাতির প্রবেশ ঠেকাতে ইকো-ফ্রেন্ডলি বেড়া, সৌরবিদ্যুত চালিত ফেন্সিং বা প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি – স্থানীয় জনগণকে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে হাতি সংরক্ষণে সম্পৃক্ত করা।
গবেষণা ও মনিটরিং – হাতির চলাচল ও অভ্যাস নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা এবং লোকালয়ে নেমে আসা হাতির পালকে মনিটরিং করা।
আহ্বান
কাপ্তাইসহ রাঙ্গামাটি জেলায় হাতি সংরক্ষণ এখন সময়ের দাবি। প্রকৃতির এই অমূল্য সম্পদকে রক্ষা করতে হলে সরকারি-বেসরকারি সকল মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। পাহাড়ি এলাকায় হাতির নিরাপদ আবাসস্থল এবং পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।