কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে নিরাপত্তা চাইলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল
স্টাফ রিপোর্টার :
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে নিরাপত্তা চাইলেন মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল। পুলিশের গ্রেফতারের ১৯ দিন পর রবিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে তার জামিন হয়। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে জেলা কারাগার থেকে বের হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক হৃদয় বলেন, ‘ আমি ঠিক জানি না কী কারণে এমন মামলা দেওয়া হলো। সেটি স্কুলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, রেষারেষি বা প্রাইভেট পড়ানো নিয়ে একদল শিক্ষকের হিংসার কারণেও হতে পারে। তবে আমি রাষ্ট্রের কাছে এখন নিরাপত্তা চাই।’ কী কারণে এতদিন জেলে থাকতে হলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হয়তো আমার নিরাপত্তার খাতিরেই জেলে রাখা হয়েছিল। এখন জামিন পাওয়ায় আমি খুশি।’
এদিকে, অসুস্থতার কারণে শিক্ষক হৃদয়কে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী ববিতা হালদার। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক দেখাতে তাকে ঢাকায় আত্মীয়ের বাসায় পাঠানো হয়েছে। সেখানে হয়তো সপ্তাহখানেক থাকবেন। তিনি মুক্তি পাওয়ার পর যারা তার মুক্তির জন্য সহযোগিতা করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তা ছাড়া, তিনি নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাও চেয়েছেন। মামলাটি যেন দ্রুত খারিজ হয়ে যায় এবং পুরো ঘটনাটি যারা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনারও দাবি করেছেন তিনি।’ এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ সকালে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদ পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে বিদ্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান আসাদ বাদী হয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা করেন। গত ৪ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-১-এ জামিন শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। পরে রবিবার (১০ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোতাহারাত আক্তার ভূঁইয়া পাঁচ হাজার টাকা বেল বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করেন। এদিন বিকালেই তিনি জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।