হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ কালের বিবর্তনে কুষ্টিয়ার পল্লী অঞ্চল থেকে অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে তাল গাছ। তবুও বর্তমানে অনেকেই তালের আঁটি রোপণ করে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে কুষ্টিয়ার হাট-বাজারে তালের শাঁসের বেশ কদর বেড়েছে। মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস গ্রামীণ অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে।
কুষ্টিয়া জেলাসহ উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে এবার তালের শাঁসের ব্যাপক কদর বেড়েছে। সেই সাথে বিক্রির হিড়িক পড়েছে।
কুমারখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে বা হাটবাজারে বেরিয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া লোকজন। জীবিকার তাগিদে ছুটে চলছে যেই যার যার গতিতে। কুষ্টিয়া সদর এলাকায় বেশ কদিন থেকে বিভিন্ন হাট বাজারে,পাড়া-মহল্লায় সুস্বাদু তালের শাঁস বিক্রি করে যাচ্ছে বিক্রেতারা। এটি জনপ্রিয় সব মানুষের কাছে। তালের শাঁসে রয়েছে গুণও। শুধু শাঁস নয়। রস, গুড়, পাকা তাল, পিঠা এসব অত্যন্ত মজাদার খাবার। মৌসুমী ফলের মধ্য তাল শাঁসেরও ব্যাপক কদর বেড়েছে।
২৩ মে কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া দবির মোল্লার রেলগেট বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার রাস্তাঘাট, ফুটপাতসহ নানান জায়গায় চোখে পড়ে সুস্বাদু তালের শাঁস ফলটি ধারালো ‘দা’ দিয়ে কেটে শাঁস বের করে দিচ্ছে বিক্রেতারা। ক্রেতাদের চাহিদা কম নয় কিন্তু।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া দবির মোল্লার রেলগেট বাজারে দেখা মিলল তালের শাঁস বিক্রেতা নান্নু শেখ। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি এ মৌসুমে তাল সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করেন। কিন্তু অন্য সময় পেশা হিসেবে বিভিন্ন কাজ করেন।
নান্নু শেখ আরও জানান, কেউ একটু তরল, আবার কেউ একটু শক্ত শাঁস পছন্দ করেন। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কাদি (ছড়া) তাল বিক্রি হয়। এভাবেই তালের মৌসুম আসলে তার সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসে।
বিক্রেতারা জানান, প্রতিটি তালে ২/৩ টি শাঁস থাকে। এটি ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হয়। গরমে শাঁসের কদর একটু ভিন্ন। এসব তালের শাঁস কুষ্টিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে এনে বিক্রি করা হয় বলেও জানায় তারা। এসব তাল উত্তর-বঙ্গের নানা স্থান থেকে এনে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘এ বছর তালের ভালো ফলন হয়েছে। সেই সাথে তালের ফলনটাও ভালো হয়েছে। এছাড়া নতুন নতুন গাছ থেকে এই তাল সংরক্ষণ করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন অনেকেই বজ্রপাত রোধে তালগাছ রোপণ করে থাকেন বিভিন্ন রাস্তায় সড়কের ধারে ও খালের পাড়ে তালের গাছ রোপণ করা হয়ে থাকে। কৃষি অফিসসহ সামাজিক ও বিভিন্ন সংগঠনের আলাদা আলাদা দল হিসেবে এই তালের গাছ রোপণ করে আসছে।’