ভুয়া নামে ঋণ বিতরণ ও আদায়কৃত কিস্তির টাকা আত্মসাতের দায়ে গ্রামীণ ব্যাংক মুজিবনগর শাখার তিন কর্মকর্তাকে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে পাঁচ লাখ পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাবাসের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম দুই আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নোয়ালী গ্রামের তোরাব আলীর ছেলে গ্রামীণ ব্যাংক মহাজনপুর মুজিবনগর শাখার জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক এসএম শরিফুজ্জামান (৪০), ঝিনাইদহের শৈলকুপা গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে অপর শাখা ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান (৪০) এবং চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার পাঁচকমলাপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে সিনিয়র শাখা ব্যবস্থাপক সোহেল রানা (৩৯)। তাদের মধ্যে সোহেল পলাতক।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে কয়েকজন ঋণ গ্রহীতার অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৭ সালের ১২ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি অভিযানিক দল গ্রামীণ ব্যাংক মুজিবনগরের মহাজনপুর শাখায় অভিযান চালায়। অভিযানে ২০১৩ সালের আগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ বিতরণ সংশ্লিষ্ট ১৬টি খাতের কাগজপত্র পরীক্ষা করে দুদক। সেখানে ভুয়া নামে ঋণ বিতরণ ও ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে আদায়কৃত কিস্তির প্রায় ছয় লাখ টাকা ভুয়া বা জাল স্বাক্ষর করে পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাতের সত্যতা পায় দুদক।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সেই সময়ের সহকারী পরিচালক হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে ৪০৯/৪২০/১৯৯/ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধযোগ্য অভিযোগ এনে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ এজাহারভুক্ত তিন আসামির নামে অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দেন দুদকের সেই সময়ের সহকারী পরিচালক হাফিজুল ইসলাম।
রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে দুদক কুষ্টিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ হোসেন জানান, অভিযোগ ছিল, মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের গ্রামীণ ব্যাংক শাখার কর্মকর্তারা অর্পিত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বৃহস্পতিবার এ রায় দিলেন আদালত।