কতিপয় বিদেশি কূটনীতিক বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কাজে কূটনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থী এবং অযাচিতভাবে নাক গলিয়েছে উল্লেখ করে এ ধরনের কূটনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থি কাজকে প্রশ্রয় না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল আজ ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন।
এ সময় জাসদের উদ্দেশ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, বিদেশি কূটনীতিকরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাতে এসে কোনো পরামর্শ দেননি। আগের ধারাবাহিকতা অনুসরণে তারা ইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সিইসি ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।
শিরীন আখতার বলেন, জাসদ মনে করে, সংবিধান ও আইন অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সংবিধান ও আইন অনুযায়ী যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচনসহ সব নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তৈরি থাকা।
রাজনৈতিক বিতর্কে না জড়ানোর পরামর্শ দিয়ে জাসদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ বা বর্জনের বিষয়টি একান্তই সেই রাজনৈতিক দলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা বর্জনের বিষয়সহ কোন রাজনৈতিক বিতর্কেই নির্বাচন কমিশনের জড়িত হওয়া বা মতামত, বক্তব্য, মন্তব্য দেয়া উচিৎ নয়। নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক বিরোধে সালিশি সংস্থা নয়।’
জাসদ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইভিএম পদ্ধতি সংযোজনকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে। তারা ইভিএম পদ্ধতিকে কারিগরীভাবে ত্রুটিমুক্ত ও বিশ্বাসযোগ্য করার পাশাপাশি ব্যালট পদ্ধতিতেও ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান।
তারা নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধেরও দাবি জানায়।
এ সময় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা সবাইকে আহ্বান করব আপনারা আসেন। সবার বক্তব্য, নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়। আমরা সুষ্পষ্টভাবে বলেছি, আমরা কাউকে বাধ্য করতে পারব না, সেটা আমাদের দায়িত্বও নয়। আমাদের দায়িত্ব সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো।’
পরে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে সিইসি বলেন, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে হবে।
সংলাপে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এডভোকেট এম আবু নাছের তালুকদারের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। কমিশনের কাছে তারা ৯টি প্রস্তাবনা পেশ করেন।
এর আগে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন দলটির আমির মাওলানা হাফেজ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজীর নেতৃত্বে ১২ সদস্য ইসির সংলাপে অংশ নেন। দলের পক্ষে তারা ৪০টি লিখিত প্রস্তাব ইসির কাছে উপস্থাপন করেন।
আগামীকাল ২৫ জুলাই সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১ টা বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বিকাল ৪টা থেকে ৫টা লিভারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।