শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বলদিপাড়া-হলদিঘর শতবর্ষী খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের প্রতিবাদ করে কারাগারে থাকা ৭ জন নারীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার শাহজাদপুর আমলি আদালতের বিচারক গোলাম রব্বানী এ জামিন আদেশ দেন।
ওই আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জামিন প্রাপ্তরা হলেন, বলদীপাড়া গ্রামের ঝর্ণা বেগম (৩৫), অজুফা (৩৮), ফুলপড়ি (৪০), মালেকা (৪০), খুশি বেগম (৩৯) আকলিমা (৪৫) ও শাফিয়া (২৬)।
অন্যদিকে দেশব্যাপী আলোচিত শাহজাদপুর উপজেলার বলদিপাড়া-হলদিঘর শতবর্ষী খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে উপজেলা প্রশাসন। মাঠ রক্ষায় স্থানীয় গ্রামবাসীর আন্দোলনের মুখে প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন। তারা এ আশ্রয়ণ প্রকল্পটির জন্য বিকল্প নতুন জায়গা খুঁজছেন বলে জানা গেছে।
স্থগিতের বিষয়টি বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে নিশ্চিত করেছেন শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ তারিকুল ইসলাম। তিনি জানান, জনগনের জন্যই এই প্রকল্প। সেটা যদি জনগণ না চায় তাহলে আমাদের কি করার আছে। জনগণকে কষ্ট দিয়ে কিছু করতে চাইনা। তাই গ্রামবাসীর দাবির বিষয়টি আমলে নিয়ে কায়েমপুর ইউনিয়নের বলদিপাড়া-হলদিঘর খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির সিদ্বান্ত স্থগিত করা হয়েছে।
মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সরকারী দায়িত্ব পালনে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি। হামলা ও মামলার বিষয়টি আইনের গতিতে চলবে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বলদিপাড়া-হলদিঘর খেলার মাঠের পরিবর্তে পাশের গালা ইউনিয়নের কাশিপুর মৌজায় আশ্রয়ণ প্রকল্পটি করার জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। ৫২ শতক ওই জায়গাটি সরকারি খাসখতিয়ান ভুক্ত। এখানে প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো ঝামেলা নেই। এ জন্য জমি জরিপের পর প্রাথমিক একটি স্কেসসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
এদিকর প্রশাসনের সিদ্বান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলদিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বিকেএসপির নিয়মিত ক্রিকেটার নয়ন তারা বলেন, গত দুই দিন গ্রামে কোনো পুলিশ আসেনি। নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তারও করেনি। এ ছাড়া গ্রামের পাহারায় থাকা গ্রাম পুলিশদেরকেও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে আমরা অনেকটা স্বস্তি বোধ করছি। তবে গ্রেপ্তার আতংকে গ্রামের অধিকাংশ নারী পুরুষ এখনও অন্যত্র পালিয়ে রয়েছেন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার ৯ নারী-পুরুষদের মুক্তির দাবি করেছেন মাঠ রক্ষার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এই নারী ক্রিকেটার।
উল্লেখ্য, রোববার (২১ আগস্ট) সকালে উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের হলদিঘর এলাকায় ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠে আশ্রয়ন প্রকল্পের নির্ধারিত স্থানে মাটি ভরাটের উদ্দেশ্যে গেলে মাঠ রক্ষায় গ্রামের শতশত নারীপুরুষ পথরোধ করে তাদের ফিরে যেতে বলেন। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে ৫ বছরের শিশু ও এসিল্যান্ড লিয়াকত সালমান সহ অন্তত ৬ জন গ্রামবাসী আহত হন।
এ ঘটনায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের পেশকার আব্দুল হাই বাদী হয়ে ৫৪ জনের নাম উল্লেখসহ ১২০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে ৭ নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ