বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকের সামনে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। ছিনতাইকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। সোমবার (১৮ জুলাই) রাত সাড়ে ১১ টায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন আইন বিভাগের রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আল-আমীন হোসেন। তারা উভয়ই ছাত্রলীগ নেতা শাহজালাল সোহাগের অনুসারী বলে জানা যায়।
ভুক্তভোগী ড্রাইভার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রাতে তিনি জয়পুরহাট থেকে খুলনায় ট্রাকে করে সরিষার তেলের কন্টেইনার নিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ ট্রাকের চাকা পাংচার হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান করে। এসময় ছাত্রলীগের দুই কর্মী নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাইক নিয়ে সেখানে এসে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন। পরে ড্রাইভারের কাছে গাঁজা আছে কিনা জানতে চান। গাঁজা না পেয়ে ছুরির ভয় দেখিয়ে দশ হাজার টাকা দাবি করলে ড্রাইভার তাদেরকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় তারা ড্রাইভারের মানিব্যাগ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে তারা পাঁচটি তেলের কন্টেইনার দাবি করে। এসময় গাড়ির চাবি ও দুইটি তেলের কন্টেইনার নামায়। পরে স্থানীয় লোকজন ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন আসলে তারা পালিয়ে যায়।
পরে প্রধান ফটকের সামনে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মী সিকিউরিটি অফিসার আব্দুস সালাম সেলিমকে জানালে তৎক্ষনাৎ তিনি সেখানে উপস্থিত হন। এরপর প্রক্টরিয়াল বডিকে জানানো হলেও প্রক্টরিয়াল বডির কেউই উপস্থিত হন নি। পরে ভুক্তভোগী ড্রাইভার ইবি থানায় গিয়ে অবহিত করলে এস আই সাইফুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এবিষয়ে এস আই সাইফুল বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা ঘটনাস্থলে যাই। অভিযুক্ত ছাত্ররা হলে ছিলো কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তো আমরা হলে প্রবেশ করতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সাথে কথা বললে তারা বিষয়টি সকালে সমাধান করবেন বলে আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আল-আমিন জানান, আমি ওখানে খাবার আনতে গেছিলাম বেশি সময় ছিলাম না। দেখলাম কাব্য ভাই গাড়ির লাইসেন্স চেক করতেছেন। দেখে চলে আসছি।
এদিকে ভুক্তভোগী ড্রাইভার মামুন শেখ আরও বলেন, তারা মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় ছিলো। আমার কাছ থেকে জোর করে গাড়ির চাবি ও মানিব্যাগ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যায়। আমার কাছে গাঁজা চায় তারা। আমি দিতে না পারায় মারধর করে। এতো বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ে যদি ছাত্ররা ছিনতাইকারী হয় তাহলে শিক্ষিত আর৷ অশিক্ষিতদের মধ্যে পার্থক্য থাকলো কই। টাকা নেওয়ার পর আমি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে শুধু চাবিটা ম্যানেজ করে দিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা চাবিটাও উদ্ধার করে দেয় নি। পরে ভিন্ন উপায়ে গাড়ি স্টার্ট করে চলে এসেছি। আজ মঙ্গলবার ( ১৯ জুলাই) থানায় মামলা করবো।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরে ও গভীররাতে হওয়ায় প্রক্টরিয়াল বডির কেউ উপস্থিত হতে পারেন নি। তবে আমাদের সিকিউরিটি অফিসার সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমি ইবি থানার ওসির সাথে কথা বলেছি। ভুক্তভোগী ড্রাইভার থানায় অভিযোগ করলে তারপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। আর আমরা ইতিমধ্যে অভিযুক্তদের বিভাগে বিষয়টি জানিয়েছি।