মনির হোসেন ঃ- মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার গৌরবের ৩১ বছর পূর্তিতে ও চাঁদপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে বিজয় মেলার শুভ সূচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭ টায় চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার উদযাপন কমিটির আয়োজনে এই মেলার শুভ সূচনা হয়। আগামী ১০ই জানুয়ারি’২৩ পর্যন্ত এই মেলা চলবে।
যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার এম এ ওয়াদুদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর ৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক শফিকুর রহমান এমপি।
তিনি বলেন, আজকের দিনটি অত্যন্ত আবেগপ্রবন একটি দিন, এইদিন চাঁদপুর মুক্ত হয়েছিল, আমাদের রবিউল আউয়াল কিরন আজ স্বাধীন বাংলার পতাকা তুলেছিলেন। এই দিনটি আমাদের আবেগের দিন এই জন্য যে আমরা যেদিন যুদ্ধে গেলাম সেদিন আমাদের সামনে ছিলো অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, হয়তো ১০ বছর না হয়তো ১৫ বছর না হয়তো ভিয়েতনামের মত ৪০ বছর আমাদের যুদ্ধ করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেক রকমের অনিশ্চয়তা ছিল। সেপ্টেম্বর মাসে মোটামুটি আমরা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম কারণ তখন এত রাজাকার জন্ম নিয়েছিল। এরপর আমরা আগরতলা থেকে একটি বার্তা পেয়েছিলাম। যেটা পাঠিয়েছেন আমার কাছে শেখ শহিদুল ইসলাম তাতে লেখা ছিল তোমরা ঘাবড়িও না ইনশাআল্লাহ আমরা জয়লাভ করবোই এবং সব দিক থেকেই আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ সেই বার্তা পেয়েই আমরা আবার ৭ই মার্চের মত উত্তাল হয়ে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম।
তিনি আরো বলেন, আজকে এই মুক্তিযুদ্ধের প্রায় ৩০ লক্ষ শহীদ এবং পাঁচ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত তাদের প্রত্যেকের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
আজ সেই দিন আমরা আনন্দের সহিত শত শত গুলি ফুটিয়েছিলাম। এর একমাত্রই কারণ এই পৃথিবীতে এত বড় যুদ্ধের সম্মুখীন থেকে এত নির্যাতিত হচ্ছিলাম তখন একজন মানুষ ভারতের সেই প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী তিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি আমাদের এক কোটি শরণার্থীকে খাবার, ঔষধ, কাপড়,আশ্রয় দিয়েছিলেন । এই যুদ্ধে ভারতের অসংখ্য সৈনিক শহীদ হয়েছিলেন। এবং ইন্দিরা গান্ধী সেপ্টেম্বর মাসে ৩৭ টি দেশ ভ্রমণ করেছিলেন এবং সে সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে বলেছিলেন আমার পাশে আমার প্রতিবেশী মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে সেখানে গণহত্যা চলছে নারী নির্যাতন চলছে আমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারিনা। আমাকে অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে। তোমরা আমাকে সাপোর্ট করতে হবে।
আরেকটি দাবি আমার সাউথ ইস্ট এশিয়ার প্রখ্যাত বিপ্লবী নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার জন্য পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। তার জীবন বাঁচাতে আমি তোমাদের সাহায্য চাই।
মেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাঈল হোসেন, জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর জেলা মুক্তিযুদ্ধ ডেপুটি কমান্ডার ওয়ারেন্ট অফিসার আবদুল হাফিজ খান, সাংস্কৃতিক জোট চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি তপন সরকার, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিজয় মেলা উদযাপন কমিটির যুগ্ম মহাসচিব কমরেড জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।
কোরআন তেলাওয়াত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সানাউল্লাহ খান। গীতা পাঠ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন সরকার।