প্রিয়ন্ত মজুমদার,কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধুিঃ
কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পূর্বপাশে অবস্থিত কোম্পানীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড। এই স্ট্যান্ডের ১ কিলোমিটার জুড়ে ১২ মাস যানজট লেগেই থাকে। ফুটপাত দখলে থাকে দোকানগুলোর, হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল, টার্মিনালের বাইরে গাড়ি রাস্তায় দাড় করিয়ে যত্রতত্র যাত্রী উঠায়-নামায় এবং মন্থর গতিতে রাস্তা সংস্কার যানজটের জন্য এই চারটি প্রধান কারণকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।
গত ২০ শে আগস্ট শনিবার সকালে এই রাস্তা দিয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার পথে প্রায় আধাঘন্টা জ্যামের কবলে পরলে, মুরাদনগর থানার ওসিকে তাৎক্ষনিক ক্লোজ করেন তিনি। এই বিষয়টি নিয়ে উপজেলার আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে গুরুত্বের সাথে একাধিকবার আলোচনা হলেও সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান হচ্ছে না উল্টো ভোগান্তি যেন নিত্যসঙ্গী হয়েছে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ থেকে দেবিদ্বার এই দুই কিলোমিটার জুড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুরাদনগর, নবীনগর, হোমনা ও দেবিদ্বার থানার বড় বড় ব্যবসায়ীদের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসার জোন হচ্ছে কোম্পানীগঞ্জ বাজার। কিন্ত ব্যস্ততম এ সড়কের ফুটপাট তো বটেই, অনেক স্থানে সড়কও অস্তিত্বহীন। সড়ক জুড়ে ফুটপাত থাকলেও সবই ছোট বড় ফল ব্যবসায়ীদের দখলে।
বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সড়কের মোড়ে মোড়ে রাস্তার উপর বিভিন্ন যানবাহন দাড় করিয়ে চাঁদা আদায় করে এক পক্ষ, আবার আরেক পক্ষ দেখছে গাড়িতে টোকেন আছে কিনা। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়ক ও ফুটপাতে নৈরাজ্য চলছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ে একাধিকবার আলোচনা আসলেও প্রশাসন তাদের কাছে অসহায়।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা থেকে সিলেটগামী যানবাহন চলাচল করে এই কোম্পানীগঞ্জ বাজারের ওপর দিয়ে। মাঝেমধ্যে ঢাকার পথে দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় যানজট হলে ঢাকাগামী গাড়িগুলো ক্যান্টনম্যান হয়ে কোম্পানীগঞ্জ দিয়ে ভৈরব হয়ে ঢাকা যায়। তাছাড়া দেবিদ্বার, মুরাদনগর,ও নবীনগর থানার লোকজনের এই রাস্তায় আসা-যাওয়া সকাল-সন্ধ্যা। টার্মিনাল থাকলেও সুগন্ধ্যা,ফারজানা ও নিউ জনতা নামের বাস গুলো রাস্তার উপরে গাড়ি দাড় করিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করায়। ফলে সৃষ্টি হয় যানজট। আবার চার থানার কয়েক হাজার সিএনজি (অটোরিক্সা) গাড়িতে গ্যাস নিতে আসে এই মহাসড়ক ব্যবহার করে পান্নারপুল গ্যাস পাম্পে।
চালকরা বলছেন, মাসিক টোকেন নিয়ে হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে তিন চাকার যান চলায় তারা।
তবে হাইওয়ে পুলিশ ইনচার্জ কামাল উদ্দিন ও টাফিক সাজেন্ট মো. আবু হাসনাত টোকেন বানিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ফোটপাতে দোকান আর অতিরিক্ত গাড়ির চাপেই জানজট হচ্ছে।
অপরদিকে ফুটপাতের কিছু ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, দৈনিক দুইশত টাকা চাঁদা দিয়ে দোকান করছেন তারা। একথা সরাসরি বলতে ভয় পায়। কারণ যারাই চাঁদা নিচ্ছে তারা যদি পরদিন দোকান করতে না দেয় এই ভয়ে। কয়েকজন ব্যবসায়ীর ভাষ্য কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয় বলেই আমরা ম্যানেজ করেই দোকান করি। কারা আপনাদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে এমন প্রশ্নে ? বলেন, নাম বললে ব্যবসা থাকবে না। তবে তারা আওয়ামী লীগ করেন।
পথচারী জহির মিয়া বলেন, পায়ে হাটার পথ দোকানীদের দখলে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই রাস্তার উপর দিয়ে হাটতে গিয়ে গাড়ির বাম্পারে ধাক্কা খেতে হয় হরহামেসায়।