বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে দুই দলেরই। পয়েন্ট টেবিলের তলানির দুই দল ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস। ১০ দলের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড আছে সবার শেষে, ডাচরা নবম স্থানে। তবে, ২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা পেতে উভয় দলের জন্যই ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ।
এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩৯ রানের সংগ্রহ পায় জস বাটলারের দল। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংলিশ বোলারদের তোপে ৩৭.২ ওভারে ১৭৯ রানে গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। এতে ১৬০ রানের বিশাল জয়ে পয়েন্ট টেবিলের সাতে উঠেছে জস বাটলারের দল।
বুধবার পুনেতে ইংল্যান্ডের দেয়া ৩৪০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৫ রানেই বিদায় নেন ডাচ ওপেনার ম্যাক্স ও দাউড। তিনে নামা কলিন অ্যাকারম্যান ফেরেন ডাক মেরে। চারে নেমে ওপেনার ওয়েসলে বারেসির সঙ্গে কিছুক্ষণ থিতু হন অ্যাঙ্গলব্রেখট। তবে রান আউট হয়ে বারেসি (৩৭) ফিরে গেলে ভাঙে জুটি। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অ্যাঙ্গলব্রেখটও। তিনি বিদায় নেন ৩৩ রান করে। এরপর বাস ডি লিড এসে করেন ১০ রান।
ষষ্ঠ উইকেটে স্কট এডওয়ার্ডসের সঙ্গে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৫৯ রানের জুটি গড়েন নিদামানুরু। এডওয়ার্ডসকে ৩৮ রানে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন মঈন। পরবর্তীতে নিদামানুরু ছাড়া আর কেউ টিকতে পারেননি। অপরাজিত থাকা নিদামানুরু করেন ৩৪ বলে সর্বোচ্চ ৪১ রান। ইংলিশদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন মঈন আলী ও আদিল রশিদ। ডেভিড উইলি নেন দু’টি উইকেট। এছাড়া ক্রিস ওকস পান একটি উইকেট।
এর আগে, টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন। ইংলিশ দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও মালানের ব্যাটে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। বেয়ারস্টো সেভাবে ছন্দ খুঁজে না পেলেও অন্যপ্রান্তে দ্রুত রান তুলতে থাকেন মালান। ইনিংসের সপ্তম ওভারে গিয়ে নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। আরিয়ান দত্তের বলে ব্যাক ফুটে গিয়ে প্যাডেল সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে পল ভ্যান ম্যাকেরিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ১৫ রান করা বেয়ারস্টো।
অন্যদিকে, ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মালান। এবারের বিশ্বকাপে এটি তার তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। এদিকে তিনে নামা জো রুটকে নিয়ে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিলেন মালান। তাদের দু’জনের ৮৫ রানের জুটি ভাঙেন লোগান ভ্যান বিক। ডানহাতি এই পেসারের রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন ২৮ রান করা রুট। ডানহাতি এই ব্যাটারের পর সেঞ্চুরির পথে থাকা মালান রান আউটে কাঁটা পড়ে সাজঘরে ফেরেন। আউট হওয়ার আগে ৮৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন মালান।
বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি পাঁচ নম্বরে নামা হ্যারি ব্রুক। বাস ডি লিডের করা স্টাম্পের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে কলিন অ্যাকারম্যানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১১ রান করা ব্রুক। ক্রিজে এসে আরও একবার হতাশ করেছেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। ভ্যান ম্যাকেরিনের স্লোয়ার বলে মিড অফে দাঁড়িয়ে থাকা নিদামানুরুর হাতে ক্যাচ দেন ৫ রান করা বাটলার।
ব্যর্থতার পাল্লা ভারী করেন মঈন আলীও। আরিয়ানের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন ১৪ রান করা এই বাঁহাতি ব্যাটার। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ৫৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন স্টোকস। ওকসকে সঙ্গে নিয়ে সপ্তম উইকেটে গড়েন ১২৯ রানের জুটি। চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগারও স্পর্শ করেন স্টোকস। ভ্যান ম্যাকেরিনের বলে রিভার্স সুইপ করে চার মেরে ৭৮ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন তারকা এই অলরাউন্ডার।
স্টোকসকে দারুণ সঙ্গ দেন ক্রিস ওকস। বলের সাথে পাল্ল দিয়ে রান করেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। সেই সাথে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি। ডি লিডের বলে আউট হওয়ার আগে ৪৫ বলে ৫১ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলেন ওকস। ইনিংসের শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ভ্যান বিককে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন ১০৮ রানের ইনিংস খেলা স্টোকস। নেদারল্যান্ডসের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন বাস ডি লিড। এছাড়াও দু’টি করে উইকেট নেন আরিয়ান দত্ত ও ভ্যান বিক। ১টি উইকেট পান ভ্যান ম্যাকেরিন।