একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের মনোনয়ন ও দলীয় পদ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মুহাম্মদ কাদেরের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে এই অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছন জাতীয় পার্টির এক নেতা। অভিযোগে সংরক্ষিত চারটি মহিলা সংসদ পদ প্রার্থীর কাছ থেকে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এই অভিযোগ দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে জাতীয় পার্টির চারজন মহিলা সংসদ সদস্য মনোনয়ন দিতে ‘মহিলা সংসদ সদস্য মনোনয়ন বোর্ড’ ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা উৎকোচ নেয়। দলের পদবী ও নাম ভাঙিয়ে উল্লেখিত পরিমাণ টাকা ঘুষ গ্রহণের মূল সুবিধাভোগী তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, যিনি মূলত: দলের কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, অতি চাতুর্যতার সাথে দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অসুস্থতার অজুহাত তৈরি করে তৎকালীন দলীয় মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাকে ক্রীড়নক হিসাবে ব্যবহার করে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে অধিষ্ঠিত করেন।এতে আরও বলা হয়, মূলত দলীয় চেয়ারম্যানের এর পদবী এবং প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্যই জিএম কাদের দলের মহাসচিব রাঙ্গাসহ কতিপয় নেতাকে নিয়ে দলের অভ্যন্তরে একটি আলাদা বলয় তৈরি করেন। মসিউর রহমান রাঙ্গার মাধ্যমে মনোনীত মহিলা সংসদ সদস্যদের জাতীয় সংসদের আসনে মনোনীত করার অঙ্গীকার ও অর্থ প্রদানের শর্তে চুক্তিপত্র সম্পাদনের বিষয়ে একজন মহিলা সংসদ সদস্যের চুক্তির কপি মিডিয়ায় ফাঁস হয়ে যাওয়া এবং মহাসচিবের কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখিত চুক্তিনামার স্বীকারোক্তিই ঘটনার সত্যতা প্রমাণে যথেষ্ট।
অভিযোগে আরও বলা হয়, দলীয় পদ-পদবী ব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে দলের কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর মশিউর রহমান রাঙ্গাকে ব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্টি করা একটি নামসর্বস্ব প্যাডে এরশাদ সাহেবের স্বাক্ষর নকল করে ক্ষমতাপত্রের মাধ্যমে নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া চেয়ারম্যান হওয়ার পরেই শুরু হয় দলের পদ-পদবী প্রদানের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ এবং পাচার।
এতে আরও বলা হয়, দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট হলেও এখন পর্যন্ত প্রকৃত অর্থে প্রায় ৬০০ থেকে ৬৫০ জন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে দলের প্রবীণ অভিজ্ঞ বহু রাজনৈতিক নেতাকে দলের পদ থেকে বহিষ্কার করা হতো। পরে শূন্যপদে এবং নতুন নতুন পদবী সৃষ্টি করে এখন পর্যন্ত কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে নিজের আত্মীয়স্বজনের কাছে গচ্ছিত রেখেছেন ও বিদেশে প্রচুর অর্থপাচার করেছেন।