জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
শনিবার সকালে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার গত নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছিলেন। তখন দাম নির্ধারণ করা হয় ৮০ টাকা লিটার। ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর বাস ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ, লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো হয় ৩৫ শতাংশ যা তেলের দাম বাড়ানো হারের চেয়ে অনেক বেশি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা দেশের সাধারণ মানুষের চরম এক দুঃসময়ে জ্বালানি তেলের দাম একলাফে প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছির বাড়ানো ফলে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে। পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ায় পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য সাধারণ মানুষের সামর্থ্যরে বাইরে চলে যাবে।
পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা দেখা দেবে। শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হবে, ফলে আমদানির উপর নির্ভরশীলতা বাড়বে। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক ছোট ছোট শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে একদিকে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে জাতীয় অর্থনীতি উপর চাপ আরও বাড়বে।
অন্যদিকে বেকারত্ব সমস্যা আরও প্রকট হবে। আমাদের দেশে সাধারণত তেলের দাম যে পরিমাণ বাড়ে তার থেকে কয়েকগুণ বেশি বাড়ে বাস ও অন্যান্য গণপরিবহন ভাড়া। পণ্য পরিবহন ভাড়াও ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দেয় ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিকেরা।
বাসের ক্ষেত্রে সরকার বাসের মালিক-শ্রমিক নেতারা মিলেমিশে একচেটিয়াভাবে বাসের ভাড়া যে পরিমাণ বাড়ায় বাসে বাসে তার কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া আদায় করে। সরকার বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দিলেও সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী বাসে আদায় হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা বা বর্ধিত ভাড়া আদায় বন্ধে তেমন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে না।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালেও বর্তমানে তেলের বাজার নিম্নমুখী। এই সময়ে বাজার পর্যবেক্ষণ না করে, কেবল আইএমএফের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী।
অনতিবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে, পূর্বের মূল্য বহাল রাখার দাবি জানান তিনি।
জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আজ বিকেল ৩টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের আয়োজন করেছে।
উক্ত প্রতিবাদ সভায় দেশের ভুক্তভোগী সকল নাগরিকদের অংশগ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।