মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে ঢাকা-ওয়াশিংটনের বর্তমান সুসম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেছে উভয় পক্ষ। এ ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে নতুন পন্থা অন্বেষণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
রবিবার (১৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক দপ্তরের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূত ডোনাল্ড লু তার বাংলাদেশ সফরের অংশ হিসেবে এ দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেন। বৈঠককালে তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানাবিধ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এসব বৈঠকে উভয় পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহায়তা, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, শ্রম, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এ ছাড়াও বাংলাদেশে অবস্থানরত ১০ লক্ষাধিক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তা, তাদের প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসনের বিষয়সমূহ আলোচনায় উঠে আসে।
এ সময় ডোনাল্ড লু রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিশেষ করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কার্যক্রমের ইতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়ে সাধুবাদ জানান। উভয় পক্ষ দু’দেশের বর্তমান সুসম্পর্কের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে নতুন পন্থা অন্বেষণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জনের জন্য মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। ১০ কোটিরও বেশি কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানানো হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো মহামারীর ক্ষেত্রেও একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহ প্রকাশ করে। উভয় পক্ষ পারস্পরিক অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারত্ব বজায় রেখে অন্যান্য খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়। বাংলাদেশে ব্যাপক আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সব ইতিবাচক প্রচেষ্টার বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সম্মানে পররাষ্ট্রসচিব আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে শিক্ষক, গবেষক, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ডোনাল্ড লু আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানের সঙ্গেও পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও স্টাফ অফিসার উইলিয়াম শিবার বৈঠকগুলোতে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সচিব (মেরিটাইম বিষয়ক) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মাদ ইমরান, সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী, মহাপরিচালক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।