বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো ডায়াস ফেরেস রোববার (৮ জানুয়ারি) গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাত শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে ব্রাজিল সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রেক্ষাপটে সরকারপ্রধান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) অথবা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সইয়ের ওপর জোর দেন।
মার্কোসুর দেশগুলোর (আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ে) সঙ্গে পিটিএ বা এফটিএ সইয়ের বিষয়ে আলোচনা চলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই চুক্তিগুলোর সই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলেন।
বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে কৃষি সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রাজিলের বাজারে ফার্মাসিউটিক্যালস বাংলাদেশের একটি প্রধান রপ্তানি পণ্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার কারণে ব্রাজিলের বাজারে ফার্মা আইটেমটি এখন কিছু বিধিনিষেধের সম্মুখীন হচ্ছে।
ব্রাজিলিয়ান কর্তৃপক্ষকে বিধিনিষেধ শিথিল করার অনুরোধ করেন তিনি।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনাকালে শেখ হাসিনা বলেন, ১১ লাখের বেশি জোরপূর্বক বিতাড়িত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। একটি এখন বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনসংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে। প্রতি বছর ৩০ হাজার নতুন শিশু জন্ম নিচ্ছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলে ব্রাজিলকে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
ব্রাজিলের নতুন প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।
ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলের মৃত্যুতে শোক এবং পেলের পরিবার ও ব্রাজিলের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।
ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ব্রাজিল বাংলাদেশের জন্য তৈরি পোশাক শিল্পের বড় একটি বাজার হতে পারে।
বাণিজ্য ও প্রযুক্তিখাতে দুই দেশের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।
দুই দেশের মধ্যেকার জনগণ এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যকার যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন পাওলো ফার্নান্দো।
কৃষিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে ভালো অভিজ্ঞতা, চর্চা ও প্রযুক্তি বিনিময় হতে পারে।
সাক্ষাতকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জাল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।