বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেই সাথে এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে গাড়ি চলাচলও সীমিত রয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা গেছে, মিরপুরের টেকনিক্যাল, মাজার রোড বা গাবতলীতে সেভাবে চেকপোস্টের মাধ্যমে তল্লাশি না হলেও আমিনবাজারে রাজধানীগামী বাসে কঠোর তল্লাশি করছেন পুলিশ সদস্যরা। রাস্তায় বেরিকেড দিয়ে প্রত্যেক গাড়িতে ঢুকে তল্লাশি করে ছাড়া হচ্ছে।
আমিনবাজারে জেলা পুলিশের পাশাপাশি জেলা ডিবি পুলিশও কঠোর নজরদারিতে দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া, আমিনবাজার ব্রিজ পার হয়ে গাবতলীতে ঢোকার মুখেই পুলিশের নজরদারি থাকলেও তল্লাশি করা হচ্ছে না। তবে কোনো গাড়িকে সন্দেহ হলেই গাবলতীতে তল্লাশিসহ গাড়ির কাগজপত্র দেখছেন পুলিশের সার্জেন্ট।
রাশেদ নামের পুলিশের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ সচেষ্ট আছে। আমরা কোনো গাড়িই আটকাচ্ছি না। তবে প্রত্যেক গাড়িতে আমরা তল্লাশি করছি। সাধারণ জনগণের জানমাল রক্ষায় পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।
জানা গেছে, দুই দলের সমাবেশকে ঘিরে অন্তত ৩০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। র্যাব, আনসার, এপিবিএনের অন্তত পাঁচ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে পল্টন, কাকরাইল, ফকিরাপুল, মতিঝিল, গুলিস্তানসহ সমাবেশের কাছাকাছি এলাকায়।
এদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে অন্যান্য দিনের তুলনায় বাস ঢুকছে কম। পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, আজ ৫-১০ শতাংশ গাড়ি চলছে।
শ্রমিকরা জানান, অন্যান্য দিন যেখানে টার্মিনালের প্রবেশ পথে সিরিয়াল লেগেই থাকে আজ সেখানে বাস একেবারেই কম আসছে।
ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলকারী একটি পরিবহনের চালক নাম প্রকাশ না করে বলেন, শুনেছি ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ আছে। এজন্য অনেকগুলো গাড়ি আজ চলছে না।
এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। সড়কের বিভিন্ন স্থানে চালানো হচ্ছে তল্লাশি কার্যত্রম।
রাজধানীর শাহবাগ, বাংলামোটর, ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে বাস, সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও পিকআপসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করলেও সংখ্যায় অনেক কম। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়া সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কোনো সড়কে যানজটের চিত্র দেখা যায়নি। যদিও সাপ্তাহিক ছুটির দিন যানবাহনের চলাচল কম থাকে। তবে গণপরিবহনের সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও কম দেখা গেছে।
বর্তমান পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এছাড়া র্যাবের একাধিক দল ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে।
র্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক এএসপি মাজহারুল ইসলাম বলেন, সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ পেট্রোল ও চেকপোস্ট জোরদার করেছি আমরা।
তিনি বলেন, অপরাধীদের ঠেকাতে ও জনগণের নিরাপত্তার জন্য রোবাস্ট পেট্রোলসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাব এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
র্যাব-১০ থেকে জানানো হয়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ র্যাব-১০ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করেছে ব্যাটালিয়নটি।
র্যাব-১০ আরও বলছে, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক, পেশাজীবী মানুষের যাতায়াত ও নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ছিনতাইকারী রোধে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, ডেমরা, ধোলাইপাড়, শ্যামপুর, ওয়ারী ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালসহ র্যাব-১০ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে বিশেষ রোবাস্ট পেট্রোল এর মাধ্যমে পর্যাপ্ত টহল পরিচালনা করছে। এছাড়াও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা ডিউটিতে রয়েছে।