ঢাকা , বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
অধিনায়ক হয়েই দুঃসংবাদ পেলেন আফ্রিদি রাণীশংকৈলে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ! ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান। নির্বাচন হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও ভালো হবে: সেনাবাহিনী মহালছড়িতে বাজারে ভয়াবহ আগুন, ১৪ দোকান পুড়ে ছাই বনপাড়া সেন্ট যোসেফস্ স্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত হলো বর্ণাঢ্য বার্ষিক শিক্ষা–সাহিত্য ও বিজ্ঞান মেলা এবং বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা কাপ্তাইয়ে “সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত রামগঞ্জে এসবিএসি ব্যাংকের গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হলেন জোহরান মামদানি চিৎমরমে লাখো পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন

দেবিদ্বারে এতিমখানার নামে কোটি টাকার লুটপাট, সমাজসেবা অফিসারদের মদদে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব

সাংবাদিক

দেবিদ্বার উপজেলায় এতিম শিশুদের নাম ব্যবহার করে বছরের পর বছর ধরে চলছে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার সমাজসেবা অফিসারদের ছত্রছায়ায় একটি চক্র ভূয়া এতিম দেখিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ক্যাপিটেশন ফান্ড আদায় করে এর বড় অংশ আত্মসাৎ করছে।

উপজেলার ৩৬টি এতিমখানায় কাগজে-কলমে ৫০০ জনেরও বেশি এতিম শিশু থাকার কথা বলা হলেও সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে প্রকৃত এতিমের সংখ্যা ৫০ জনও নয়। অধিকাংশ এতিমখানায় দিনের পর দিন তালা ঝুলতেও দেখা যায়, অথচ সরকারি রেকর্ডে সেগুলো “চলমান” হিসেবে দেখানো হয়েছে। বাবা-মা জীবিত থাকা সত্বেও জাল ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে এতিম’ বানানো হচ্ছে শিশুদের। স্থানীয় সূত্র ও তদন্তে উঠে এসেছে আরও ভয়াবহ তথ্য, যেসব শিশুকে এতিম দেখানো হয়েছে তাদের অনেকের বাবা-মা জীবিত রয়েছেন। চেয়ারম্যান কর্তৃক জাল ডেথ সার্টিফিকেট বানিয়ে পিতামাতাকে মৃত দেখানো হয়েছে এবং এই জাল তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাপিটেশন ফান্ড সংগ্রহ করা হচ্ছে। চাঞ্চল্যকরভাবে জানা গেছে, যেসব শিশুদের নামে এই অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে, তাদের অনেকেই জানে না যে তাদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারি বরাদ্দের জন্য। এমনকি, অনেক ছাত্র ইতোমধ্যে হাফেজিয়া পড়া শেষ করে এতিমখানা ছেড়ে গেছে, তবুও তাদের নাম দিয়ে এখনও অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে। এদের কাছ থেকে এতিমখানা কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে খাওয়া-দাওয়া ও আবাসনের নামে টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এ বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ করে চুপ থাকার অভিযোগও রয়েছে। এই দুর্নীতির বিষয়ে বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও স্থানীয় সমাজসেবা অফিস কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, দেবিদ্বার সমাজসেবা অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকার পরও একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। বরং ঘুষের বিনিময়ে দুর্নীতিতে জড়িত পক্ষগুলোর সঙ্গে আপস করে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। এ ধরনের ভয়াবহ দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ শুধু রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় নয়, বরং প্রকৃত এতিম ও দরিদ্র শিশুদের অধিকার হরণ। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা সময়ের দাবি।

দেবিদ্বারের জনসাধারণ ও সুশীল সমাজ প্রশাসনের কাছে জোরালোভাবে আহ্বান জানাচ্ছেন, এমন সংঘটিত অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৯:৪০:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
৫৯৫ Time View

দেবিদ্বারে এতিমখানার নামে কোটি টাকার লুটপাট, সমাজসেবা অফিসারদের মদদে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব

আপডেটের সময় : ০৯:৪০:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

দেবিদ্বার উপজেলায় এতিম শিশুদের নাম ব্যবহার করে বছরের পর বছর ধরে চলছে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার সমাজসেবা অফিসারদের ছত্রছায়ায় একটি চক্র ভূয়া এতিম দেখিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ক্যাপিটেশন ফান্ড আদায় করে এর বড় অংশ আত্মসাৎ করছে।

উপজেলার ৩৬টি এতিমখানায় কাগজে-কলমে ৫০০ জনেরও বেশি এতিম শিশু থাকার কথা বলা হলেও সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে প্রকৃত এতিমের সংখ্যা ৫০ জনও নয়। অধিকাংশ এতিমখানায় দিনের পর দিন তালা ঝুলতেও দেখা যায়, অথচ সরকারি রেকর্ডে সেগুলো “চলমান” হিসেবে দেখানো হয়েছে। বাবা-মা জীবিত থাকা সত্বেও জাল ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে এতিম’ বানানো হচ্ছে শিশুদের। স্থানীয় সূত্র ও তদন্তে উঠে এসেছে আরও ভয়াবহ তথ্য, যেসব শিশুকে এতিম দেখানো হয়েছে তাদের অনেকের বাবা-মা জীবিত রয়েছেন। চেয়ারম্যান কর্তৃক জাল ডেথ সার্টিফিকেট বানিয়ে পিতামাতাকে মৃত দেখানো হয়েছে এবং এই জাল তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাপিটেশন ফান্ড সংগ্রহ করা হচ্ছে। চাঞ্চল্যকরভাবে জানা গেছে, যেসব শিশুদের নামে এই অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে, তাদের অনেকেই জানে না যে তাদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারি বরাদ্দের জন্য। এমনকি, অনেক ছাত্র ইতোমধ্যে হাফেজিয়া পড়া শেষ করে এতিমখানা ছেড়ে গেছে, তবুও তাদের নাম দিয়ে এখনও অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে। এদের কাছ থেকে এতিমখানা কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে খাওয়া-দাওয়া ও আবাসনের নামে টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এ বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ করে চুপ থাকার অভিযোগও রয়েছে। এই দুর্নীতির বিষয়ে বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও স্থানীয় সমাজসেবা অফিস কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, দেবিদ্বার সমাজসেবা অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকার পরও একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। বরং ঘুষের বিনিময়ে দুর্নীতিতে জড়িত পক্ষগুলোর সঙ্গে আপস করে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। এ ধরনের ভয়াবহ দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ শুধু রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় নয়, বরং প্রকৃত এতিম ও দরিদ্র শিশুদের অধিকার হরণ। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা সময়ের দাবি।

দেবিদ্বারের জনসাধারণ ও সুশীল সমাজ প্রশাসনের কাছে জোরালোভাবে আহ্বান জানাচ্ছেন, এমন সংঘটিত অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।