ভারতের আইপিএলের আদলে বাংলাদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগ আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয় ২০১১ সালে। ছয় দলের প্রথম আসর মাঠে গড়ায় ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ৮টি মৌসুম দেখেছে বিপিএল। এই ৮ মৌসুমে ম্যাচ গড়াপেটা, পারিশ্রমিক বকেয়াসহ উঠেছে নানান বিতর্ক। আসরে অংশ নেওয়া দলের সংখ্যা, ফ্র্যাঞ্চাইজি স্বত্ব সবকিছুই বদলেছে বছরে বছরে।
বিসিবির কর্তাব্যক্তিদের ভাষায় আইপিএলের পরেই বিপিএল। কিন্তু দশম মৌসুমে এসে টাইগারদের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নিজ মুখেই জানালেন বাংলাদেশের বাইরে এই লিগ নিয়ে আগ্রহ নেই কারো। এক যুগ পেরিয়ে গেলেও বাজার ধরতে পারায় হতাশা ঝড়েছে সাকিবের কণ্ঠে। তার মতে, মার্কেটিং দুর্বলতার কারণেই জনপ্রিয়তা পায়নি বিপিএল। তবে দেশের ক্রিকেটে বাজার নেই এই কথা মানতে নারাজ বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
গালফ অয়েল বাংলাদেশ লিমিটেড এক দিনের জন্য চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) করেছে সাকিবকে। বুধবার সেই দায়িত্ব গ্রহণের পর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন এই অলরাউন্ডার। সেখানেই সাকিব বিপিএল নিয়ে বিস্ফোরক সব মন্তব্য করেন।
সাকিবের মতে, বাইরের দেশে কারোরই বিপিএল নিয়ে খুব একটা আগ্রহ নেই। কি কারণে, সেটা সম্ভ হয়নি? নাকি বিসিবি পারেনি? এমন প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, ‘পারিনি না চাইনি জানি না। বলাটা কঠিন। চাইলে না পারার কোনো কারণ আমি দেখি না। বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা। আমার ধারণা আমরা সৎ মনে চাইনি কখনো, ও রকম কিছু করতে।’
বিপিএলের পারফরম্যান্স অন্যান্য লিগে গণ্য করে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘না। আমার ধারণা খুব বেশি দেখে না। হয়ত দেখায় এত এত দেশে সম্প্রচার হচ্ছে। আসলে কেউ সেভাবে দেখে না। আইপিএলকে হিসাবের বাইরে রাখলাম। বিগ ব্যাশ, পিএসএল বা সিপিএলে যখন কেউ ভালো করে জাতীয় দলে সুযোগ দিয়ে দেয়।’
তবে বাংলাদেশের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে হতাশ সাকিব বলেন, ‘বিপিএল তো বাইরের দেশের কেউ ওরকম দেখে না যে প্যারামিটার সেট করবে যে বিপিএলের খেলা এরকম, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্ট, এখানে যারা ভালো খেলছে তাদের মধ্যে কোয়ালিটি আছে- এমন কেউ চিন্তাই করতে পারেনি এখন পর্যন্ত। এখনও এ পর্যায়ে রয়ে গেছি, খুবই হতাশাজনক।’
ফ্রাঞ্জাইজিগুলো বলছে টাকা নেই। স্পন্সর পাচ্ছে না? ক্রিকেটে বাজার নাকি নেই! এর জবাবে সাকিব বলেন, ‘বাজার নেই কারণ আমরা বাজার তৈরি করতে পারিনি। আমরা ভ্যালু অ্যাড করতে পারলে অবশ্যই এই বাজার অনেক বড় হওয়ার কথা ছিল।’
সাকিব যোগ করেন, ‘আপনি গ্রামের এমন কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখছেন না যেখানে বাজারটা হচ্ছে না। এমন না এটার জনপ্রিয়তা নেই। ১৬-২০ কোটি মানুষের যেখানে এত পছন্দের খেলা এটার বাজার থাকবে না এটা খুবই দুঃখজনক। মার্কেটিংয়ের জায়গা থেকে এটা বড় ব্যর্থতা।’