ধামরাইয়ে মাটিবাহী ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলে অতিষ্ঠ জন জীবন

জাতীয়

মোঃ রাজন আহম্মেদ,ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি ধামরাইয়ে মাটিবাহী ড্রাম ট্রাক ও মাহিন্দ্রা ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে যানবাহন। মাঝেমধ্যেই যানবাহন উল্টে সড়কের উপর বা সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে জনসাধারণের জন্য আঞ্চলিক সড়কে যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে। এদের দাপটে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বুধবার (১২ এপ্রিল) বিকালে ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের বালিয়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের সামনে একাধিক মাটির ট্রাক আঞ্চলিক সড়কটি আটকিয়ে রাখতে দেখা যায়। এছাড়াও মাটির ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলে যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে এবং জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেন। ধামরাই উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে দেখা যায় উর্বর কৃষি জমি একযোগে কর্তন করা হচ্ছে। সেসব কৃষি জমির টপ সয়েল বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। সেইসাথে আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কে অবৈধ মাহিন্দ্রা ট্রাক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সরকারি অবকাঠামো ধ্বংস করা হলেও মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। বরং প্রশাসনের কাছ থেকে মাটি কাটার মৌখিক অনুমতি পাচ্ছে মাটি ব্যবসায়ীরা। গত ৫ বছর আগেও যেসব জমিতে সোনালী ফসল দক্ষিণা বাতাসে ধুল খেত এবং শমশম শব্দে কৃষাণের প্রাণ জুড়িয়ে যেত। গোলা ভরা ধানে কৃষকের মুখে হাসি ফুটতো। কিন্তু মাটি কাটার ফলে সেই জমিতে আজ কৃষকের স্বপ্ন ডুবে যাচ্ছে। তৈরি হয়েছে পুকুর আর বইছে পানি। ধামরাই কৃষি অফিসারের তথ্যসূত্রে জানা যায় গত ৫বছর আগে ধামরাইয়ে কৃষি আবাদযোগ্য জমি ছিল ২৩হাজার হেক্টর। বর্তমানে তা হ্রাস পেয়ে ২২হাজার হেক্টরে এসেছে। এর মধ্যে প্রধান কারণ হচ্ছে অবাধে পুকুর খনন। অবৈধ মাটি ব্যবসার জন্যই প্রতি বছর ঘটে যাচ্ছে হতাহতের ঘটনা। সরকারি অবকাঠামো ধ্বংস করে এভাবে যদি দিনের পর দিন অবৈধ মাটি ও ইটভাটার ব্যবসা চলতে থাকে তাহলে ধামরাই উপজেলার মানচিত্র জলাশয়ে পরিণত হবে। ধামরাই উপজেলা কৃষি অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন, তিন ফসলি জমি ও দুই ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতেছি। বিগত দিনে আমরা যত অভিযোগ পেয়েছি সবগুলোতেই অভিযান করেছি। তারপরও মাটি কাটা বন্ধ হচ্ছে না। গত বছরে ৫’শ হেক্টর কৃষি জমি কমেছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে খাদ্যের সমস্যা হতে পারে। তাই আমরা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে আলোচনা করেছি স্থায়ীভাবে যেন মাটি কাটা বন্ধ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, তিন ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। আজকেও অভিযান চালিয়েছি। ভবিষ্যতেও আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *