নওগাঁর ডিসি চত্বরে গরু-ছাগলের খামার, দূষিত পরিবেশে অতিষ্ঠ জনগণ
নওগাঁর জেলা প্রশাসক চত্বরে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে গরু ছাগলের খামার। চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও পরিবার নিয়ে আলিশান ভাবে বসবাস করছেন সরকারি সম্পত্তিতে। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ বাড়তি বিলের বোঝা টানতে হচ্ছে সরকারকে। কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় কোর্ট চত্বরে আসা নাগরিকরা অতিষ্ঠ।
মুমিনুল ইসলাম মুমিন চুক্তিভিত্তিক চাকুরী করতেন গণপূর্ত বিভাগে পাম্প অপারেটর হিসাবে। অপারেটর হওয়ার সুবাদে থাকতেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) চত্বরে। আর এই সুযোগে ডিসি চত্বরে আলাদা বাউন্ডারি দিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজের পারিবারিক আবাসস্থল। সরকারি চাকরিজীবী সন্তানসহ দুই সন্তান ও তার পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এই চত্বরেই। শুধু তাই নয় এই গুরুত্বপূর্ণ চত্বরের ভিতরে তিনি গড়ে তুলেছেন গরু, পাগল ও হাঁস মুরগির খামার। এতে ময়লা আবর্জনা ও গবাদি পশুর বিষ্ঠায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। অন্যদিকে সেখানে বসবাসরত তার পরিবারে ব্যবহার করা হচ্ছে ফ্রিজ টিভি ও নানান বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশসহ খামারে বিদ্যুৎ ব্যবহার করার কারণে অতিরিক্ত বিলের বোঝা টানতে হচ্ছে সরকারকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নওগাঁ গণপূর্ত বিভাগে মাস্টার রোলে মুমিনুল ইসলাম পাম্প অপারেটর হিসেবে চাকরি কর্মরর্ত ছিলেন,পাম্প অপারেটর মুমিনুল ইসলামকে গণপূর্ত বিভাগের ১টি রুম বরাদ্দ থাকার কথা থাকলেও ৩টি রুম সহ বেশকিছু জায়গায় দখল করে গড়ে তুলেছেন গরু-ছাগলের খামার এবং স্বাবলম্বী ছেলেদের পরিবার নিয়ে করছেন বসবাস। জানা গেছে, সরকারি দপ্তর গুলো ছুটি হলেই সেই বসবাসের স্থানে চলে নানা রকমের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড। পাম্প অপারেটর মুমিনুল দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি কর্মরত আছেন তবুও ছেলের পরিবার সহ বসবাস গণপূর্ত জায়গায় ভোগ করছেন সুবিধা। গণপূর্তির বিভাগের বিদ্যুৎ বিলে গরু-ছাগলের খামার সহ রুমে ঝুলিছেন প্রায় ৯টি বৈদ্যুতিক ফ্যান রয়েছে গিজার সহ বৈদ্যুতিক চুলা বিদ্যুৎ দিয়ে ব্যবহারকৃত সরঞ্জাম। আরো জানা যায়, নওগাঁ শহরের দয়ালের মোড় এলাকায় পাম্প অপারেটর মুমিনুলের বসবাস উপযোগী সম্পদ থাকার পরেও, স্বাবলম্বী হয়েও সরকারি জায়গায় বসবাস করছেন মুমিন। চাকরি শেষ তবুও ক্ষমতার জোরে না”কি গণপূর্ত অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এমন সুবিধা নিয়ে বসবাস করছেন প্রশ্ন সচেতন মহলের।
এ বিষয়ে, নওগাঁ জেলা এ্যাডভোকেট বার এ্যাসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক শওকত ইলিয়াস কবির বলেন, পাম্প অপারেটর মুমিনুল ইসলাম মুমিনের যে গরু ছাগলের খামারে দূষিত বর্জ্য “র” কারণে আমাদের কয়েকজন এ্যাডভোকেটের ঠিকমত তাদের চেম্বারে বসতে পারে না। তাদের পালনকৃত হাঁস-মুরগি পায়খানা প্রতিনিয়ত আমাদের পরিস্কার করার পরে যেখানে আমাদের কার্যক্রম শুরু করতে হয়। এতে করে একদিকে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে আমাদের অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়ে কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। চাকরি থেকে অব্যাহত প্রাপ্ত পাম্প অপারেটর সরকারি জায়গায় দখল করে এখানে কিভাবে গরু-ছাগলের খামার তৈরি করে বসবাস করছেন এ যেনো দেখেও দেখার কেউ নেই এবং এই বিষয়টি প্রশাসনের কাছে দ্রুত নিরসন করার দাবী জানিয়েছেন তিনি।
এই বিষয়ে,মুমিনুল ইসলাম মুমিন সাথে একাধিক বার কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি বক্তব্য দিতে চাইনি।
নওগাঁ জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো:মিজানুর রহমানের সঙ্গে মোবাইলে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, মুমিনুল ইসলাম মুমিন নওগাঁ গণপূর্ত বিভাগে মাস্টার রোলে পাম্প অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার চাকরি মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে,তবে তিনি এখনো পাম্প অপারেটর হিসেবে দায়িত্বে আছেন। আমি তাদেরকে বলেছি কাউকে যেনো ডিস্টার্ব যেনো না করে এবং চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া পাম্প অপারেটর মুমিনুল ইসলাম মুমিন গণপূর্ত ও কোর্ট চত্বরে গরু-ছাগলের খামার করেছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ফোন কেঁটে দেয়।