মোঃ সুইট হোসেন নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃনওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার পাহাড়পুর জিতেন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক বিপ্লব কুমার মণ্ডল জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে ১২ বছর চাকরি করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত প্রতিবেদন গত ২৭ জুলাই বুধবার প্রধান শিক্ষককে পাঠিয়েছেন এনটিআরসিএ এর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম।
এর পূর্বে গত ২৪ মে ২০২২ ইং তারিখে এনটিআরসিএ সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে তিনি শিক্ষক বিপ্লব কুমার মন্ডলের নিয়োগকালীন সকল কাগজপত্রসহ তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কপি চেয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে পত্র প্রেরণ করেন। সে পত্র মারফত জানা যায়, সহকারী শিক্ষক (উদ্ভিদ বিদ্যা) বিপ্লব কুমার মন্ডল, পিতা: বিমল চন্দ্ৰ মন্ডল, রোল নম্বর: ১১১৫০৫৫০, রেজি নম্বর: ৭০০০২৫৮, ৩য় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০০৭ এর শিক্ষক নিবন্ধন সনদের সঠিকতা যাচাই করা প্রয়োজন। সে প্রেক্ষিতে উক্ত শিক্ষকের শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি, শিক্ষাগত যোগ্যতার অনুলিপি, জাতীয় পরিচয়পত্র, নিয়োগপত্র ও যোগদান পত্রের ফটোকপি সত্যায়ন পূর্বক জরুরি ভিত্তিতে এনটিআরসিএ অফিসে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন।
কাগজপত্রের আলোকে জানা যায়, গত ২২ আগস্ট ২০১১ ইং তারিখে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিপ্লব কুমার মন্ডল ২০০৭ ইং সালের বিজ্ঞান বিষয়ের (উদ্ভিদ বিদ্যা) পাশ করা একটি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে ১৬ নভেম্বর ২০১১ ইং তারিখে গঠিত নিয়োগ বোর্ডে তার চাকরি হয়। যার নিবন্ধন নং ৭০০০২৫৮/২০০৭, এ নিবন্ধন পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ১১১৫০৫৫০ এবং পরীক্ষার ফল প্রকাশের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০০৭ খ্রিঃ। নিয়োগের পর শিক্ষক বিপ্লব কুমার মন্ডল বিদ্যালয়ে ১৫ ডিসেম্বর ২০১১ খ্রিঃ তারিখে যোগদান করেন এবং তার নিয়োগকালীন নিবন্ধন সনদ দিয়েই ১ নভেম্বর ২০১২ তারিখে এমপিওভুক্ত হোন। এপর্যন্ত সে সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ১৭ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।
এনটিআরসিএ থেকে গত ২৭ জুলাইয়ে প্রেরিত প্রতিবেদনে জানা যায়, তিনি যে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন এ সনদটি অন্য ব্যক্তির বিপ্লব কুমার মন্ডলের নয়। প্রকৃত সনদধারীর নামঃ খোরশেদা আক্তার, পিতা: মোঃ চাঁন মিয়া, মাতাঃ রোকেয়া বেগম, জেলাঃ কুমিল্লা বিষয়ঃ প্রাণীবিদ্যা, প্রাপ্ত নম্বর: আবশ্যিকে ৫৩ ও ঐচ্ছিকে ৫৩। এ পত্রে আরও জানা যায় যে, সে জাল/জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন মর্মে দালিলিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। একারণে জাল ও ভুয়া সনদধারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে থানায় মামলা দায়ের করে তার অনুলিপিসহ এনটিআরসিএ অফিসকে অবহিত করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, এনটিসিআরএ হতে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচাইয়ের নির্দেশ দিলে বিপ্লব কুমার মন্ডল নিয়োগ বোর্ড গঠন ও যোগদানের ১ বছর পর ২০১২ ইং সালে অনুষ্ঠিত শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেন। তিনি যে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে চাকুরী নিয়েছেন সেই সনদের তথ্য যাচাইয়ের জন্য না পাঠিয়ে নিয়োগের ১ বছর পরে পাস করা ১০১১১১১২ নং সিরিয়াল ও রোল নম্বরের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি যাচাইয়ের জন্য এনটিআরসিএ তে পাঠিয়েছিলেন।
এব্যাপারে জানতে বিপ্লব কুমার মন্ডলের মুঠোফোনে শনিবার ৬ আগষ্ট বিকাল সারে ৫ টারদিকে একাধিকবার কল দিলেও প্রতিবেদকের ফোন তিনি রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মায়া রানী প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, আমি অসুস্থ, আপনে “সাংবাদিক” কিভাবে জানলেন, এব্যাপারে আমি কথা বলতে পারবো না, আমি অসুস্থ এমহূর্তে আমার কাছে কিছু জানতে চেওনা বলেও জানান তিনি।