নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মহাদেবপুরে নিজ বাড়ির শয়ন ঘড় থেকে মোছাঃ মিতু (২০) নামের এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে মহাদেবপুর থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার ১৯ মে বিকালে নিহত গৃহবধূ’র মৃতদেহ তার পিতার বাড়ি উত্তরগ্রাম (পলিপাড়া) গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পূর্ণ করেন স্বজনরা। গৃহবধূ মিতু নিজ শয়ন ঘড়ে সেলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা। “এমনকি মিতু’র পিতা ও স্বামী দুটি পরিবার সহ স্বজনদের নেই কোন কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ। তাহলে কেনই বা হঠাৎ করে মিতু আত্নহত্যার মতো পাপ ও জঘন্যতম পথ বেঁছে নিলেন?।
তবে মিতু যে ঘড়ে থাকতেন সেই ঘড়ে থাকা খাট ও সেলিং ফ্যানের দূরত্ব খুবই কম। এছাড়া সেলিং ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় গৃহবধূ মিতু’র মৃতদেহ খাটের উপর কিছুটা বসে থাকার মতো অবস্থায় ছিলো এবং তার বাম হাতে ক্ষতের চিহ্ন থাকার কারনে গৃহবধূ মিতু আত্নহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। গৃহবধূ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে।
স্বজন ও স্থানিয়রা জানায়, প্রায় ৫ বছর পূর্বে মহাদেবপুর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আলতাব হোসেন এর ছেলে (বর্তমানে সরস্বতীপুর বাজারের জৈনক তোফাজ্জল হোসেন এর দোকানে কর্মরত) ইউনুচ আলী (২৮) মহাদেবপুর উপজেলার উত্তরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রী মিতু’র সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
প্রেমের সম্পর্কের ঘটনাটি প্রকাশ পেলে সে সময় দু’ পরিবারের সম্মতিতে ইউনুচ আলীর সাথে মিতু’র বিবাহ সম্পূর্ণ হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রী’র সম্পর্ক ও ছিলো খুবই ভালো। হঠাৎ করে কয়েক মাস পূর্বে স্বামী-স্ত্রী’র মাঝে বিবাদ দেখাদিলে গৃহবধূ মিতু স্বামীর বাড়ি ছেরে পিতার বাড়িতে চলে আসেন, সেখানে কিছুদিন থাকার পর প্রায় দু’ মাস পূর্বে স্বামীর সাথে স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর বুধবার ১৮ মে বিকালে মুঠোফোনে অসুস্থতার খবর পেয়ে মিতুর পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা এসে নিজ শয়ন ঘড়ে খাটের উপর শোয়ানো অবস্থায় মিতু’র মৃতদেহ দেখতে পায়। এসময় তাদের জানানো হয়, মিতু ওড়না দিয়ে সেলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করেছেন।
গৃহবধূ মৃত্যুর খবর পেয়ে সাথে সাথে মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ, ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ও এস আই শামিনুর সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক সুরত হাল রির্পোট অন্তে ময়না তদন্তের জন্য ঘটনাস্থল থেকে রাতেই নিহত গৃহবধূ’র মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়।
মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার রাতে মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, গৃহবধূ মৃত্যুর খবর পেয়ে সাথে সাথেই আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে ঘটনাটি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে জানালে মহাদেবপুর-বদলগাছী (সার্কেল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জ্বনাব এটিএম মাইনুল স্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর প্রাথমিক সুরতহাল রির্পোট অন্তে ঘটনাস্থল থেকে রাতেই মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক বৃহস্পতিবার নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে ওসি আরো বলেন, ময়না তদন্তের রির্পোট আসার পরই মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাবে।
তবে স্থানিয়রা জানান-ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ উদ্ধার কালে নিহতের স্বজনরা প্রথমে মৃতদেহ নিয়ে যেতে দিবেনা বলে বাঁধাচৃষ্টি করলে থানা পুলিশ স্বজনদের বুঝিয়ে বলে ঘটনাস্থল থেকে ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের কয়েকজন জানান, শয়ন ঘড়ে খাট ও খাটের উপরে সেলিং ফ্যানের দূরুত্ব খুবই কম, এমনকি গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো মৃতদেহটি খাটের উপর বসে থাকার মতো অবস্থায় ছিলো, এছাড়াও নিহত গৃহবধূর বাম হাতে আঘাতের চিন্হ ছিলো। নিহতের পিতার বাড়ির লোকজন (স্বজনরা) আসার ও প্রায় দের ঘন্টাপর ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয় এবং সর্বশেষ ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ নিতেও বাধা দেওয়ার ঘটনায় গোপনে দু’ পরিবারের স্বজনরা আপোষ করে নিয়েছে বলেও তারা মনে করছেন। গৃহবধূ মিতু আত্নহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। তবে স্থানিয় সচেতন মহল জানিয়েছেন, যেহতু মৃতদেহ’র ময়না তদন্ত হয়েছে, ময়না তদন্ত রির্পোট-এ মৃত্যুর সঠিক কারন উদর্ঘাটন করবে পুলিশ।