হিজাব নিয়ে গুজব ছড়ানো, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির অভিযোগে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের আলোচিত শিক্ষিকা আমোদিনী পালের দায়ের করা মামলায় দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ওই মামলার এজহারে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। এরইমধ্যে মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামি কিউ এম সাঈদ টিটু ও সামসুজ্জামান মিলনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পাল বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা ও বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হয়ে বিদ্যালয়ে হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে সাংবাদিক কিউ এম সাঈদ টিটুকে মহাদেবপুর উপজেলা সদরের লাইব্রেরী পট্টি এলাকার নিজ বাড়ি ও সাংবাদিক সামসুজ্জামান মিলনকে উপজেলা সদরের কুশার সেন্টারপাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের আমোদিনী পালের করা মামলায় এজহার নামীয় আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়। টিটু ও মিলন স্থানীয় গণমাধ্যমে সাংবাদিকতা করতেন।
তবে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া বিপিএম বলেন, গ্রেফতার হওয়া আসামিদের সাংবাদিক হিসেবে নয় অপরাধী হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল গত ৯ এপ্রিল থানায় মামলা করেন। এরপর এ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অন্য আসামিদের বিষয়ে ওসি বলেন, আমোদিনী পালের করা মামলায় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ, সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন, নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার গহেরপুর গ্রামের বাসিন্দা সালাউদ্দিন আহমেদসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আমোদিনী পালের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শামিনুল ইসলাম বলেন, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পলাতক থাকায় অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার কারা সম্ভব হয়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গত, ৬ এপ্রিল মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া প্রায় ১৮ জন শিক্ষার্থীকে স্কুল ড্রেস না পরে আসায় শাসন করেন স্কুলটির সহকারী শিক্ষিকা আমোদিনী পাল। যা পরে হিজাব বিতর্কে রুপ নেয়। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে শিক্ষিকা আমোদিনী পাল নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন।