ডিজিটাল বাংলাদেশে জনপ্রিয় ও সহজলভ্য হয়ে উঠেছে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)। এক্ষেত্রে বাজার দখল রাখতে ডাক বিভাগের নগদের ওপর নিয়মিতভাবে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিকাশের বিরুদ্ধে। এমন হীন কাজে ঢাকা থেকে করসাজির মূল হোতা হিসাবে উঠে এসেছে বিকাশের হেড অব সেলস ইরফানুল হকের বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই খুলনাতে বিকাশের হেড অব সেলস ইরফানুল হকের নির্দেশে নগদের দোকান, ব্যানার, প্যানা ভাঙচুর এবং অর্থ লোপাটের মতো ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে ১৩ এপ্রিল খুলনা থানায় মামলাও হয়েছে। মামলা নম্বর ১৮।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ১৬০ নং হোল্ডিংয়ের শেরে বাংলা রোডস্থ আনসারী ভবনের তিন তলায় নগদের ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত আছেন মামলার বাদী খলিলুর রহমান। তিনি অভিযোগ করেন, ১২ এপ্রিল খুলনা থানাধীন সাতরাস্থা মোডের মদিনা বেকারির সামনে বিভিন্ন দোকানে নগদের প্যানা, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলতে শুরু করে মামলার ১ নং আসামি সুমন, যিনি নিজে খুলনা জেলা বিকাশের ডিস্ট্রিবিউটর। এছাড়া তার সাথে বিকাশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী আসামি মহসিন, তনু, মিল্টন, জিএম আজিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান জুয়েল, মো. মুর্শিদুজ্জামানসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জন বিকাশ হেড অফিসের হেড অব সেলস ইরফানুল হক এবং মোর্শেদুজ্জামানের নির্দেশে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও নগদ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। এসময় নগদের কর্মচারী রাব্বি হোসেন ও মেহবার হোসেনকে মারধরও করা হয়। তাদের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাও দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, বিকাশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ খুব আন্তরিকভাবে মামলাটি তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তারে সচেষ্ট রয়েছে।
উল্লেখ্য, সারাদেশে বিকাশ ও নগদের মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণ নিয়ে নানা সময় এ ধরনের ঝামেলার কথা শোনা গেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র আরও জানিয়েছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে বিলিয়ন ডলারের ডিজিটাল হুন্ডি কারবার করা ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তদন্তে সিআইডি জানতে পারে, এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ ৭.৮ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। গ্রেপ্তার হওয়া অধিংকাশই বিকাশের এজেন্ট।
গ্রেপ্তাররা হলেন- আক্তার হোসেন (হুন্ডি এজেন্ট), দিদারুল আলম সুমন (হুন্ডি এজেন্ট), খোরশেদ আলম ইমন (হুন্ডি এজেন্টের সহযোগী), রুমন কান্তি দাস জয় (বিকাশ এজেন্ট), রাশেদ মাঞ্জুর ফিরোজ (বিকাশ এজেন্ট), মো. হোসাইনুল কবির (বিকাশ ডিএসএস), নবীন উল্লাহ (বিকাশ ডিএসএস), মো. জুনাইদুল হক (বিকাশ ডিএসএস), আদিবুর রহমান (বিকাশ ডিএসও), আসিফ নেওয়াজ (বিকাশ ডিএসও), ফরহাদ হোসাইন ( বিকাশ ডিএসও), আবদুল বাছির (বিকাশ এজেন্ট), মাহাবুবুর রহমান সেলিম (বিকাশ এজেন্ট), আবদুল আউয়াল সোহাগ (বিকাশ এজেন্ট), ফজলে রাব্বি (বিকাশ এজেন্ট)। এসব অর্থপাচারকারীদের সাথেও বিকাশের হেড অব সেলস ইরফানুল হকের যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করেছে নির্ভরযোগ্য সূত্র।
এ বিষয়ে বিকাশের হেড অব সেলস ইরফানুল হককে ফোন করলেও তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।