পরমাণুর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের উদ্বোধন শেষে তিনি একথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
সরকার প্রধান বলেন, আমাদের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু একটা বিদ্যুৎকেন্দ্র না, আপনাদের এই কথা মনে রাখতে হবে নিউক্লিয়ার পাওয়ার এই শক্তিটা… এর যে ব্যবহারটা এবং শান্তির জন্য ও উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের প্রথম ও ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট চালুর প্রত্যাশা করছি আমরা। দুই ইউনিট থেকে ২৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে, আমাদের উত্তরবঙ্গের মানুষ যেখানে চিরদিন মঙ্গা লেগে থাকতো, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকতো। এই আশ্বিন-কার্তিক মাস আসলেই সেখানে দুর্ভিক্ষ হতো। সেখানে আমরা তো দুর্ভিক্ষ মুক্ত করেছিই। এখন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তাদের আর্থসামাজিক আরও উন্নত হবে। এটা হলো বাস্তবতা। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এ কাজগুলো করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল যে, সবার জন্য বিদ্যুৎ। আমরা কিন্তু আমাদের কথা রেখেছি। বাংলাদেশের প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পেরেছি এবং আমরা বাংলাদেশকে আলোকিত করতে পেরেছি। তবে বর্তমান বিশ্বে যে সমস্যাটা দেখা দিয়েছে, যুদ্ধাবস্থা, তার ওপর কোভিড এবং সমস্ত পরিবহন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মূল্যস্ফীতি; যার ফলে এখন উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। তারাও প্রতিটি ক্ষেত্রে সাশ্রয়ের দিকে নজর দিয়েছে। আমরাও, বাংলাদেশ সেদিক থেকে পিছিয়ে নেই। কারণ পৃথিবীটা এখন হচ্ছে একটা গ্লোবাল ভিলেজ। একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। সে কারণে সারা বিশ্বে যখন অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, তার ধাক্কাটা কিন্তু আমাদের ওপরও এসে পড়ে। তাই আমাদের কিছু সাশ্রয়ী হতে হচ্ছে, তার মানে এই না যে দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাবে না। মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে, পাবে। তবে এখানে সবাইকে একটু মিতব্যয়ী হতে হবে।
তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হচ্ছে। আমরা বাধ্য হচ্ছি বর্তমান পরিস্থিতির কারণে। কারণ যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে, তার ওপর স্যানকশন, এই স্যানকশন দেওয়ার ফলে আরও বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমি আশা করি, পৃথিবী এ রকম একটা অবস্থা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি পাবে।