ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি এবং সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেসম্যান। রবিবার (১৩ আগস্ট) দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গুলশানে বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনির্ধারিত এ বৈঠক চলে বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, নাহিম রাজ্জাক এবং তামান্না নুসরাত (বুবলী)। বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলে ছিলেন তিন সংসদ সদস্য শেরিফা কাদের, রানা মোহাম্মদ সোহেল এবং নাজমা আক্তার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার কংগ্রেসম্যান (রিপাবলিকান) রিক ম্যাক্রোরমিক ও হাওয়াইয়ের কংগ্রেসম্যান (ডেমোক্র্যাট) এড কেইস উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাতে আমন্ত্রণ জানান আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। একই সঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আরও বলেন, সংবিধানসম্মত উপায়ে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কারো অযৌক্তিক দাবির কারণে, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোন উপায়ে সরকার যেতে পারে না। সেই ম্যান্ডেট সরকারকে জনগণ দেয়নি।
আইনের মাধ্যমে সরকার নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করেছে বলে মার্কিন প্রতিনিধি দলকে জানায় আওয়ামী লীগের এক সদস্য। তিনি আরও বলেন, সামনের অধিবেশনে আরেকটা আইন আসবে। সেখানে নির্বাচনকালীন সময়ে বিশৃঙ্খলা করা, সাংবিধানিক বাধা দিলে শাস্তির বিধান রাখা হবে। প্রতিনিধি দলে থাকা এক সদস্য দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে এ্যানি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলেও অবস্থান জানান। এ ছাড়া দেশে এক ব্যক্তির শাসন চলছে বলেও অভিযোগ করেছে বিএনপি।
জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিরা বলেছেন বাংলাদেশে এমন ধরনের নির্বাচন হওয়া উচিত যেন বহির্বিশ্ব বুঝতে পারে, বিশ্বাস করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে।
জানা গেছে, বৈঠকে কংগ্রেসম্যান এড কেইস আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে বলেন, শুধু তোমাদের দেশে নয় সারা পৃথিবীর কাছে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আশা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে কাজ করছে দেশটি।
বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব কি কারণে সেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয় বলে জানা গেছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ইন্দো-প্যাসিফিকে অঞ্চলে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, একই সঙ্গে বাংলাদেশের জনসংখ্যা, সারা পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা কমে যাচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে সেটা চায় আমেরিকা।