জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্বজুড়ে পানির অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে পৃথিবীতে বিপজ্জনক মাত্রায় ব্যবহার উপযোগী পানি কমে যাওয়া এবং পানির তীব্র সংকট দেখা দেওয়ায় আসন্ন ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পানির অতিরিক্ত ব্যবহার এবং অতি উন্নয়নের কারণে’ বিশ্ব বর্তমানে ‘একটি বিপজ্জনক পথে অন্ধের মত চলছে’। জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে ভূপৃষ্ঠে ব্যবহার উপযোগী পানি দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার (২২ মার্চ) থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে শুরু হচ্ছে জাতিসংঘের পানি সম্মেলন। বিশ্বের হাজারো প্রতিনিধি তিন দিনের এ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস বলেন, পানি মানব সভ্যতার জীবনীশক্তি। পানির যথেচ্ছ ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ এবং এখনও আমলে না নেওয়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে যা খরচ হয়ে যাচ্ছে।
ইউএন ওয়াটার অ্যান্ড ইউনেস্কোর প্রকাশ করা ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করে আরো বলা হয়, অতিরিক্ত ব্যবহার এবং দূষণের কারণে ‘পানির সংকট স্থায়ী হয়ে যাচ্ছে’।
অন্যদিকে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে যেখানে এখনও পর্যাপ্ত পানি রয়েছে এবং যেখানে এরই মধ্যে পানির সংকট দেখা দিয়েছে, উভয় অঞ্চলেই মৌসুমি জল সংকট বাড়াচ্ছে।
প্রতিবেদনের প্রধান লেখক রিচার্ড কনর বিবিসিকে বলেন, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ এখনই ওই সব এলাকায় বসবাস করছে যেখানে উচ্চ বা মারাত্মক পানি সংকট রয়েছে। বিশ্বের সাড়ে তিনশ কোটির বেশি মানুষ বছরে অন্তত এক মাস পানির তীব্র সংকটের মধ্যে কাটান।
জাতিসংঘের আরও কয়েকটি প্রতিবেদনেও পানির সংকট দিন দিন তীব্র হয়ে ওঠার কথা বলা হয়েছে।
যেমন, গত সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের জলবায়ু প্রতিবেদন অনুযায়ী, এককথায় বলতে গেলে, বিশ্বের অর্ধেক মানুষকে বর্তমানে বছরের কোনো না কোনো সময়ে তীব্র পানি সংকটের মধ্যে কাটাতে হয়।
রিচার্ড কনর বলেন, বৈশ্বিক পানির যোগানের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, অনিশ্চয়তা বাড়ছে। যদি আমরা এ সংকটের সমাধান না করি, তবে নিশ্চিতভাবেই এটি বৈশ্বিক সংকটে পরিণত হবে।