ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে টিকে আছেন বরিস জনসন সরকারের সাবেক চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিস ট্রাস। ক্ষমতাসীন টোরি বা রক্ষণশীল দলের নেতা হওয়ার দৌড়ে এখন এই দুজনই আছেন।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে অভিবাসন নিয়ে কী করবেন, নিজের পরিকল্পনা কী সেসব বিষয়ে নিজের অবস্থান জানিয়েছেন লিস ট্রাস ও সুনাক। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার আগেই দুইজনই অবৈধ অভিবাসনকে ঠেকাতে অগ্রাধিকার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একই সাথে উভয়ই অবৈধ উপায়ে আসা অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর পূর্ববর্তী সরকারের নীতিকে এগিয়ে নেয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন।
গোটা দেশে যখন মূদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, প্রবৃদ্ধি কমছে, দেশজুড়ে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে, ঠিক সেইসময়ও কোন ধরণের ট্যাক্স কমিয়ে আনা বিষয়ে দুইজনের মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে।
শনিবার সুনাক নিজেকে “আন্ডারডগ” হিসাবে বর্ণনা করেছেন। যেখান ট্রাস কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের মধ্যে জনমত জরিপে শীর্ষে রয়েছেন।
রবিবার উভয় প্রার্থীই রুয়ান্ডায় অবৈধ অভিবাসীদের পাঠানোর সরকারের নীতির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। যদিও ইউরোপীয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস (ইসিএইচআর) এর কারণে অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় পাঠানো সম্ভব হয়নি।
লিস ট্রাস এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, রুয়ান্ডার মতো আরও ‘তৃতীয় দেশের সাথে অভিবাসীদের ডিপোর্টেশন প্রক্রিয়াকরণে অংশীদারিত্বের দিকে নজর দেবেন৷ সীমান্ত বাহিনী ২০% বাড়াবেন এবং ব্রিটেনের বিল অফ রাইটসকে শক্তিশালী করবেন।
এক বিবৃতিতে টাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, আমি রুয়ান্ডা নীতিকে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের পাশাপাশি অন্যান্য দেশগুলোকে অন্বেষণ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যেখানে আমরা একই ধরনের অংশীদারিত্বের ওপর কাজ করতে পারি।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সীমান্তে অবৈধ অভিবাস ঠেকাতে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করব এবং সীমান্তকে সুরক্ষিত করব। আমি ইসিএইচআর এবং অভিবাসন নীতি ও নিয়ন্ত্রণের জন্য তার অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রতি ঘাবড়ে যাব না।
এদিক প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে থাকা সুনাক বলেছেন, তিনি অবৈধ অভিবাসনকে “পাঁচটি প্রধান জরুরি বিষয়ের একটি বলে বিবেচনা করবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই এ বিষয়গুলোর সুরাহা করতে কাজ করবেন।
অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে যারা কাজ করছেন তাদের সাথে একাত্ম হয়ে এগিয়ে যাব। কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করব। যেসব দেশ অবৈধদের ফেরত নিতে আগ্রহী হবে তাদের যথাসাধ্য সহযোগিতা করব।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, যদি কোনো দেশ অবৈধ অভিবাসীদের ফিরিয়ে নিতে সহযোগিতা না করে সেসব দেশকে বিদেশী সাহায্য, তাদের সাথে বাণিজ্য এবং ভিসার ক্ষেত্রে আমি তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে দুবার ভাবব না।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্লামেন্টে তার শেষ প্রশ্নোত্তরপর্বে জনসন বলেছেন, তার পর যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন, তার প্রতি পরামর্শ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ থাকবেন, ইউক্রেনের পাশে থাকবেন এবং বিশ্বের সর্বত্র গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করবেন।
জনসন বলেছেন, সবাই দেশকে করোনার কবল থেকে বের করে আনার জন্য কাজ করছি। সফলও হয়েছি। তবে এখনো অনেক কাজ বাকি।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) পার্লামেন্টের অধিবেশন মুলতুবি হয়ে গেছে। এবার ক্ষমতাসীন টোরিরা তাদের নতুন নেতা নির্বাচন করবেন। ৫ সেপ্টেম্বর নতুন নেতার নাম ঘোষণা করা হবে। ততদিন জনসনই তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী পদে থাকবেন।
Tweet