প্রবাসীদের জন্য ওয়েজ আর্নার্স বন্ড চালু হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘এক সময়ে দেশকে নিয়ে নানা বিদ্রুপের মধ্যে পড়তে হতো। এখন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে পারবো, ২০৩১ সালে হবো উন্নত রাষ্ট্র। আগামী ২০৪১ সালে আমরা হবো উন্নত শক্তিশালী দেশ। প্রবাসীদের সুবিধার্থে ওয়েজ আর্নার্স বন্ড চালু হবে। তবে সুদহার আগের চেয়ে কমবে।’
বৃহস্পতিবার (১২ মে) ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ অনুষ্ঠানে মোট ৬৭ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা পুরস্কারের মাধ্যমে তাদের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবেন। এতে নিজেরা উপকৃত হবেন এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও আপনি সহযোগী হবেন।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাকে বিশ্বাস করুন, আপনারা ঠকবেন না। আপনাদের কষ্টার্জিত আয় দেশে বৈধ পথে পাঠাবেন। আপনি যখন অবৈধভাবে দেশের মধ্যে রেমিট্যান্স পাঠাবেন তখন নিজে উপকৃত হলেও দেশ উপকৃত হবে না।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দেশ থেকে চলে যাওয়া টাকা আবারও দেশে ফেরত আসবে। আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়াতে হবে, এ নিয়ে আমরা প্রবাসীদের আরও সহযোগিতা চাই। দেশের মধ্যে রেমিট্যান্স এলে দেশের উন্নয়ন হবে। এ সময় প্রবাসীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আপনারা প্রবাসে একে অপরকে সহযোগিতা করবেন। সৎপথের প্রতিযোগিতা করবেন। কখনও মিথ্যা কথা বলবেন না। একজন অপরকে সহযোগিতা করলে দেশের নাগরিকের উপকার হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, রেমিট্যান্সের প্রণোদনা খুব বেশি না, তবে এটা দেওয়া হয়েছে একটা স্বীকৃতিস্বরূপ। প্রণোদনা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর অবদান রয়েছে। তিনি সবসময় প্রবাসীদের নিয়ে চিন্তা করেন। প্রবাসীরা কীভাবে ভালো থাকবেন এবং দেশের কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে পারবেন- এটা নিয়ে (প্রধানমন্ত্রী) ভাবেন।
এক প্রবাসীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ওয়েজ আর্নার্স বন্ড চালু হবে। তবে সুদহার আগের চেয়ে কমবে। মন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতি শুনেই প্রবাসীরা সঙ্গে সঙ্গেই জানান তারা আরও বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠাবেন।
অনুষ্ঠানে বিগত ১৩ বছরের মধ্যে জিডিপি অর্জনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে নাম্বার ওয়ান বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এছাড়া আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত শক্তিশালী দেশ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মোহাম্মদ নাছের। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।
বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২০১৪ সাল থেকে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ও সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হচ্ছে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী হিসেবে মোট ১৯৯ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। করোনাভাইরাসের চলমান সংক্রমণের কারণে আরোপিত বিধিনিষেধের ফলে ২০১৯ ও ২০২০ সালে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
এ বছর, যুগপৎভাবে ২০১৯ এবং ২০২০ সালের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে সাধারণ পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী ক্যাটাগরিতে ৫৩টি এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণকারী এক্সচেঞ্জ হাউস ও ব্যাংক ক্যাটাগরিতে ১৪টি পুরস্কার দেওয়া হয়।