নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ ২৭ জুন, দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার খামারবাড়িতে অবস্থিত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (বাজেট) বরুণ দত্ত একদল ঠিকাদার ও কৃষক লীগ নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। দলীয় পরিচয়ধারী কয়েকজন ঠিকাদার ও কৃষক লীগ নেতাদের অনৈতিক দাবী পুরণ করতে রাজি না হওয়ায় এই ঘটনার সুত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, আজ দুপুর ১.৩০ মিনিটের সময় কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ ও বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাবিব মোল্লার নেতৃত্বে একদল বহিরাগত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (বাজেট) বরুণ দত্তের কক্ষে অনধিকার প্রবেশ করে দরজা লক করে দেন। এরপর কক্ষের ভেতরে প্রচন্ড চিল্লাচিল্লি ও হট্টগোলের আওয়াজ শোনা যায়।
এ সময় মহাপরিচালক মন্ত্রণালয়ে ছিলেন। তবে পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শূর ও অন্যান্য কর্মকর্তারা পাশের কক্ষে অবস্থান করলেও পরিচালক বাজেটকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেননি।
ঘটনার নেপথ্যে মহাপরিচালক পদে পদন্নোতি নিয়ে মলয় কুমার শূর ও বরুণ দত্তের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে বলে একাধিক সুত্র দাবী করেছে। কিছুক্ষণ পর দলীয় পরিচয়ধারী ঠিকাদার কাম নেতারা বেরিয়ে যান।
তখন পরিচালক (বাজেট) বরুণ দত্তকে ভীতসন্ত্রস্ত দেখাচ্ছিলো। তিনি সাথে সাথে বিষয়টি পরিচালক প্রশাসন মলয় কুমার শূরকে অবগত করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তিনি কোন আইনানুগ ব্যবস্থা নেননি।
এ ঘটনার পর গোটা অধিদপ্তরে আতংক নেমে আসে। অন্যান্য কর্মকর্তারা দাপ্তরিক কর্ম ত্যাগ করে পরিচালক প্রশাসনের কক্ষে ছুঁটে আসেন এবং তাদের নিরাপত্তা বিধানের দাবী জানান।
দলীয় পরিচয়ধারী ঠিকাদার ও নেতারা আইন অমান্য করে একটি সরকারী অফিসে অনধিকার প্রবেশ এবং একজন সরকারী কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করলেও তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো না সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অপ্রীতিকর ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “পরিচালক বাজেট স্যারের রুমে একদল লোক কথাবার্তা না বলেই ঢুকে যান এবং দরজা বন্ধ করে গালাগালি শুরু করেন যেটি কিনা বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছিল তবে ভেতরে স্যারকে লাঞ্ছিত করেছে কিনা সেটি জানিনা।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের অন্য এক কর্মকর্তা জানান, অফিসে এরকম বহিরাগত লোক কর্তৃক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তাদের ভেতর দৈনন্দিন স্বাভাবিকভাবে অফিস করা নিয়ে ভীতির সঞ্চার হয়েছে। সূত্র বলে, এ ঘটনার পেছনে পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শূর এর ইন্ধন রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাবিব মোল্লার কাছে উক্ত ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব মিথ্যা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত অভিযোগ। বরুণ দত্তের সাথে আমাদের কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পরিচালক (বাজেট) বরুণ দত্তকে ফোন করলে তিনি জানান, অফিসে প্রতিদিনের ন্যায় কিছু লোকজন এসেছিল তাদের সাথে নরমাল কথাবার্তা হয়েছে। তার অফিসকক্ষে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন উত্তর দেয়া থেকে বিরত থাকেন এবং ফোন কল কেটে দেন।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ রেয়াজুল হক জসিম, পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শূরের মোবাইলে বারবার কল দিলেও তারা কল রিসিভ করেননি।