সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘সিলেট ও সুনামগঞ্জে দুদিন ধরে বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সরকারের নির্দেশনায় বানভাসি মানুষের জন্য যা কিছু করা দরকার সব কিছুই করতে সেনা সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।’
তিনি আজ রোববার বেলা দুইটায় সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ শেষে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা জনগণ ও সরকারের প্রত্যাশা পূরণে যা যা করা দরকার সব করব।’
সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেনা সদস্যদের প্রতি সর্বোচ্চ ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা সব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে দুর্গত মানুষকে সহযোগিতা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন একটা বিপর্যয়ের জন্য আমরা কেউ প্রস্তুুত ছিলাম না। এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। এই বন্যা বহু বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’
শফিউদ্দিন বলেন, ‘এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে কেবল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নয়, সরকারের সবগুলো বিভাগ চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দুর্গম এলাকায় প্রত্যন্ত এলাকার দুর্গত মানুষের মাঝে খাদ্য, ঔষধ ও অন্যান্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি দেখতে এসেছি- তারা কতটা কষ্ট করছে, কী তাদের সাপোর্ট সেনাদপ্তর থেকে দেওয়া দরকার যাতে তারা এই অপারেশন আরও সফলভাবে করতে পারে।’
তিনি সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘কেবল সিলেট নয়, কুমিল্লা, সাভার, ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে ফোর্স পাঠানো হচ্ছে। অনেককে স্ট্যান্ডবাই করে রেখেছি। নিজস্ব রিসোর্স খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ দুর্গত মানুষকে সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ; সেই বিষয়টি সেনাবাহিনী অর্গানাইজ করছে। পাওয়ামাত্র মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন্যা দুইদিনে চলে যাবে এমন লক্ষণ দেখছি না, সময় লাগবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলেও পরবর্তী অনেক ক্ষতি রেখে যাবে। সেগুলোর জন্যও সেনাবাহিনী প্রস্তুুতি নিচ্ছে।’
এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান সেনাপ্রধান।
প্রসঙ্গত, বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় সেনাবাহিনী গত শুক্রবার থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত পানিবন্দি ৬ হাজারের মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে বলা হয়েছে।
গতকাল থেকে প্যারাকমান্ড ইউনিটসহ ১৩ ইউনিটের ২৩ প্লাটুন সদস্য সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় কাজ করছে।