ঢাকা , রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি বিতর্কিত খসড়া সংশোধন না করলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা রাতের আঁধারে জিরানী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল একের পর এক দোকান জনপ্রশাসন সচিব হলেন এহছানুল মরহুম তোফাজ্জল হোসেন স্মৃতি মিনি বার ফুটবল টুর্নামেন্ট–২০২৫, দ্বিতীয় দিনের খেলায় দি রয়েল ক্লাবের দাপুটে জয় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় গরু চরাতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া শিশু হুযাইফা (৯) মরদেহ জঙ্গল থেকে উদ্ধার আসাল মিশিগান চ্যাপ্টারের নতুন কমিটি গঠন : সভাপতি-নাইম লিয়ন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক- মিনহাজ রাসেল ‘মুক্তমঞ্চ’-এর কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত জামালপুরের শিহাব সৌদি আরব প্রবাসী শাহরাস্তি ফোরামের পক্ষ থেকে এসপিএলের উদ্যোক্তা মিঠুকে সংবর্ধনা রূপ রেখা লালন একাডেমীর ২০ বছর পূর্তি উদযাপন

বরিশাল বন কর্মকর্তার ১৭ স্ত্রী, বিচার দাবিতে মানববন্ধন

সাংবাদিক
বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির উদ্দিন পাটোয়ারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তার দুই স্ত্রীসহ স্বজনরা মানববন্ধন করেছেন। গতকাল নগরীর কাশিপুরে বন কর্মকর্তার অফিসের সামনে মানববন্ধন করে তারা।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারী চাঁদপুরের মতলব উপজেলার বাসিন্দা। তিনি এর আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকাকালীন বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন। এভাবে ঢাকার নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ ১৭ জন নারী তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

সবশেষ খুলনার চাকরিজীবী খাদিজা আক্তারকে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেন কবির। বিয়ের দ্বিতীয় দিনে স্ত্রীর বাবার বাড়ির অংশ লিখে দেওয়ার দাবি করেন কবির। এতে রাজি না হওয়ায় খাদিজাকে বরিশালের সরকারি বাসভবন থেকে বের করে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী খাদিজা আক্তার অভিযোগ করেন বলেন, ‘আমাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কবির বিয়ে করেছেন। পরে বাবার বাড়ির সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় তিনি আমাকে নির্যাতন করে বের করে দিয়েছেন।’

কবির হোসেনের অপর স্ত্রী নাসরিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকেও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কবির বিয়ে করেছেন। পরে তার বিয়ের নাটক ধরা পরার পর আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘কবির হোসেন পাটোয়ারী এ পর্যন্ত যেসব স্টেশনে চাকরি করেছেন সেই সব এলাকায় বিয়ে করেছেন। আর প্রত্যেকটি স্টেশন ত্যাগ করার পর তাদের আর কারো খোঁজ রাখেন না।’

নাসরিন আক্তার বলেন, ‘আমরা যতদূর খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি কবিরের ১৭জন স্ত্রী রয়েছে। তাদের কোনো খবর না নেওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এক বছর আগে কবির বরিশালে যোগদান করার পর এখানেও বিয়ের করার জন্য মেয়ে খুঁজছেন।’

মানববন্ধনে উপস্থিত নারীরা জানান, থানায়, আদালতে এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে কবির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেও এখনো কোনো প্রতিকার পাননি। একবার দাপ্তরিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হলেও প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় কবির হোসেন দ্রুত জামিনে মুক্তি পান। তাকে বন বিভাগ থেকে অপসারণসহ গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ থাকায় কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বন কর্মকর্তার প্রতারণা মাধ্যমে একাধিক বিয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০১:৪৯:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৬৬০ Time View

বরিশাল বন কর্মকর্তার ১৭ স্ত্রী, বিচার দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটের সময় : ০১:৪৯:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির উদ্দিন পাটোয়ারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তার দুই স্ত্রীসহ স্বজনরা মানববন্ধন করেছেন। গতকাল নগরীর কাশিপুরে বন কর্মকর্তার অফিসের সামনে মানববন্ধন করে তারা।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, বন কর্মকর্তা কবির হোসেন পাটোয়ারী চাঁদপুরের মতলব উপজেলার বাসিন্দা। তিনি এর আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকাকালীন বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন। এভাবে ঢাকার নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ ১৭ জন নারী তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

সবশেষ খুলনার চাকরিজীবী খাদিজা আক্তারকে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেন কবির। বিয়ের দ্বিতীয় দিনে স্ত্রীর বাবার বাড়ির অংশ লিখে দেওয়ার দাবি করেন কবির। এতে রাজি না হওয়ায় খাদিজাকে বরিশালের সরকারি বাসভবন থেকে বের করে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী খাদিজা আক্তার অভিযোগ করেন বলেন, ‘আমাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কবির বিয়ে করেছেন। পরে বাবার বাড়ির সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় তিনি আমাকে নির্যাতন করে বের করে দিয়েছেন।’

কবির হোসেনের অপর স্ত্রী নাসরিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাকেও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কবির বিয়ে করেছেন। পরে তার বিয়ের নাটক ধরা পরার পর আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘কবির হোসেন পাটোয়ারী এ পর্যন্ত যেসব স্টেশনে চাকরি করেছেন সেই সব এলাকায় বিয়ে করেছেন। আর প্রত্যেকটি স্টেশন ত্যাগ করার পর তাদের আর কারো খোঁজ রাখেন না।’

নাসরিন আক্তার বলেন, ‘আমরা যতদূর খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি কবিরের ১৭জন স্ত্রী রয়েছে। তাদের কোনো খবর না নেওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এক বছর আগে কবির বরিশালে যোগদান করার পর এখানেও বিয়ের করার জন্য মেয়ে খুঁজছেন।’

মানববন্ধনে উপস্থিত নারীরা জানান, থানায়, আদালতে এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে কবির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেও এখনো কোনো প্রতিকার পাননি। একবার দাপ্তরিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হলেও প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় কবির হোসেন দ্রুত জামিনে মুক্তি পান। তাকে বন বিভাগ থেকে অপসারণসহ গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ থাকায় কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বন কর্মকর্তার প্রতারণা মাধ্যমে একাধিক বিয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’