বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত কমিশন আজিজ কমিশন৷ বিচারপতি এমএ আজিজ ২০০৫ সালের ২২ মে সিইসি’র দায়িত্ব নেন৷রাজনৈতিক কোন দলের সাথে আলাপ-আলোচনা ও পরমর্শ না করেই এরতরফাভাবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোট এই বিচারপতিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেন। আপিল বিভাগের বিচারপতি থাকা অবস্থায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদে শপথ নেওয়া ছিল বেআইনি।
বিএনপি এবং নির্বাচন কমিশনার এম,এ আজিজ মিলে এক কোটি ভুয়া ভোটার এবং তিনশ’ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা পদে ছাত্রদল-শিবিরের চিহ্নিত ক্যাডারদের নিয়োগ দিয়ে পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাকে করায়ত্ত করার সব ছক একেঁ ছিল।এর বিপরীতে মানুষ তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলেছিল রাজপথে, রাজধানী থেকে প্রান্তিক জনপদে ১৪ দলের নেতৃত্বে। আন্দোলন সংগ্রামের মুখে এক সময় শেষ হয়ে আসে বিএনপি-জামায়াতের শাসনকাল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন,এম. এ. আজিজের মতো নির্বাচন কমিশন বিএনপির পছন্দ। সে কারণেই বর্তমানে আইনসিদ্ধ যে কমিশন হচ্ছে তাতে সাড়া দিচ্ছে না দলটি। কথায় কথায় তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের কথা বলেন। অভিমান করে তারা সার্চ কমিটির কাছে কোনো নাম প্রস্তাব করলেন না। এতেই প্রমাণ হয় কাউকেই বিশ্বাস করে না দলটি। অথবা বলা যায়, অতীত অপকর্মের জন্য জনসমর্থন হারিয়ে কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছে না দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব।
এদিকে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একজন বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপির যদি তাদের অতীত কুকর্মের জন্য অনুশোচনা হতো তাহলেও হয়তো আজকের এই পরিণতি হতো না দলটির। বিএনপিই তত্ত্বাবধায়ক সরকার-ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া যা করেছে তা অন্য কেউ করার সাহস পায়নি। দেড় দশক আগে বিএনপি-জামায়াত বিচারপতি এম. এ. আজিজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বানিয়েছিলেন।
খালেদা জিয়ার আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে তিনি ২০০৬ সালে দেড় কোটি ভুয়া ভোটার বানিয়েছিলেন। তার সময়ে সবচেয়ে বেশি পক্ষপাত ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে তিনি খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়নও চেয়েছিলেন। তাই এবারো বিএনপি চাচ্ছে ঠিক তেমনই এক নির্বাচন কমিশন। যে কমিশন তাদের নিশ্চয়তা দেবে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার।