বিএনপি-জামায়াতের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা একটি সন্ত্রাসী দল, জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল, তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।’
শনিবার বিকালে রাজধানীর তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের অফিস থেকে ৬ জেলার নির্বাচনি জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
জনসভার জেলাগুলো হলো-কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, বরগুনা, রাঙ্গামাটি ও নেত্রকোনা।
এর আগে গত বুধবার সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরানের (রহ.) মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে নির্বাচনি প্রচারকাজ শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর বৃহস্পতিবার পাঁচ জেলায় ভার্চুয়ালি জনসভায় বক্তব্য দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না এসে নির্বাচনকে ঠেকানোর নামে সেই ২০১৩-১৪ সালের মতো আবারো অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। বিএনপি তাদের ভয়ংকর রূপ নিয়ে আবার অগ্নিসন্ত্রাস করছে। কদিন আগে আপনারা দেখছেন কীভাবে রেলে আগুন দিয়ে মা ও শিশুকে পুড়িয়ে মারল। কোনো মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকলে এটা করতে পারে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপির নেতা কে সেটাই প্রশ্ন। দুজনই তো সাজাপ্রাপ্ত। এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তারপরও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকতে দেওয়া হয়েছে। যে বিএনপি আমাকে বারবার হত্যা করার চেষ্টা করেছে, গুলি করেছে, গ্রেনেড হামলা করেছে, বোমা পুঁতে রেখেছিল, তারপরও আমাদের সরকার খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে বাসায় থাকতে সুযোগ দিয়েছে। খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে হাওয়া ভবন খুলে দেশের মধ্যে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকে হত্যা করেছে।
‘২০০৭ সালে যখন ইমার্জেন্সি সরকার আসে, তখন আর নির্বাচন করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে নাকে খত দিয়ে বিদেশে চলে যায় তারেক। এখন বিদেশ থেকে হুকুম দিচ্ছে মানুষকে পুড়িয়ে মারার। যারা আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছেন পাপের ভাগিদার তারাই হবে, তারেক জিয়ার কিছু হবে না। তারেক জিয়া বিদেশের জুয়া খেলে ভালোই আছে। সে বিদেশে বসে সেই হুকুম দিচ্ছে আর আপনারা তার কথায় নাচেন। কার জন্য নাচেন? সে তো কোনো দিন দেশেই আসে না। এমনকি মা মরে যায় তাও তো একবার দেশে আসে না। সাহস থাকলে একবার দেশে আসুক। দেশের মা্নুষ ছাড় দেবে না, আগুন সন্ত্রাস করে হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ এ দেশের মানুষই নেবে।’ বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনে নির্বাচন, আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এজন্য আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। সবাই জনগণের কাছে যাবেন, জনগণ যাকে ভোট দেবে তিনি নির্বাচিত হবেন। আমি চাই নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণভাবে হোক। জনগণ তার ভোট সঠিকভাবে প্রয়োগ করুক। একটা দেশের গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকলে সে দেশের উন্নতি হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আছে বলেই বাংলাদেশ বদলে গেছে। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর মাত্র তিন বছরে বাংলাদেশক স্বল্প উন্নত দেশের মর্যাদায় নিয়ে গিয়েছিলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেটা আমরা নির্মাণ করেছি। প্রতিটা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। দেশের সব সেক্টরে উন্নয়ন হয়েছে। স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ করেছি। দেশ যখন উন্নয়ন অগ্রগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি তখনই বিএনপির আবার ভয়ংকর রূপ দেখা দিয়েছে। বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা একটি সন্ত্রাসী দল, জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল। তাদের থেকে এ দেশকে রক্ষা করতে হবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার, আমরা সেটি করে যাচ্ছি। জনগণ তার পছন্দের প্রার্থী বেছে নিতে পারলেই গণতন্ত্র চর্চা অব্যাহত থাকবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হলে, গণতন্ত্র রাখতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হয়।