বিশ্ব পোলিও দিবস আজ (২৪ অক্টোবর)। প্রতিবছর আজকের দিনে সারাবিশ্বে এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য ‘টিকা নিরাপদ এবং জীবন বাঁচায়’। দিবসটি ঘিরে বিভিন্ন দেশে সচেতনতার কর্মসূচি পালন করা হয়।
পোলিওমাইলিটিজ এক ধরনের ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ। এটি পোলিও নামেই পরিচিত। এক সময় গোটাবিশ্বে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করেছিল এই ভাইরাস। যে কারণে বিকলাঙ্গ বা পঙ্গুত্ববরণ করে মারা গেছে বহু মানুষ।
বাংলাদেশে সর্বশেষ ২০০৬ সালে ১৮ জন পোলিও রোগী শনাক্ত হয়। অর্থাৎ ১৪ বছর আগে ২০০৬ সালে বাংলাদেশ পোলিওমুক্ত হয়েছে। এরপর থেকে দেশে এই রোগের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা শঙ্কার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তারা বলছেন, এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতার বিকল্প নেই। কারণ ভাইরাস বহনকারী শিশুটি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক না কেন, ভাইরাসটি অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৮ সালে সারাবিশ্বে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার। ২০০৫ সালে ছিল দুই হাজার। ২০১৪ সালে ভারত, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ১১টি দেশকে পোলিও মুক্ত ঘোষণা করে সংস্থাটি।
চিকিৎসকদের তথ্যমতে, সাধারণত পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে ইপিআই হতে সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিশুদের অত্যন্ত কার্যকর ও নিরাপদ ৩ ডোজ ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন বা ওপিভি ও ২ ডোজ ফ্র্যাকশনাল আইপিভি দেওয়া হয়ে থাকে। সারাদেশে পোলিও নির্মূল ও ভবিষ্যতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব রোধে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা গেছে, বিশ্ব পোলিও দিবসের প্রচলন করে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল। ১৯৫৫ সালে বিজ্ঞানি জোনাস সক ও তার গবেষণাদল বিশ্বের প্রথম পোলিও টিকা আবিষ্কার করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৬২ সালে তিনি তৈরি করেন ইন্যাকটিভেটেড পোলিওভাইরাস টিকা। এই যুগান্তকারী সাফল্যলে স্মরণীয় করে রাখতেই তার জন্মদিনটিকে বিশ্ব পোলিও দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। তার সাফল্যের সূত্র ধরেই পরে অ্যালবার্ট স্যাবিন ১৯৮৮ সালে ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হন, যা এখনও সারাবিশ্বে শিশুদের পোলিও থেকে সুরক্ষিত রাখতে দেওয়া হয়ে থাকে।
২০০২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপিয়ান অঞ্চলকে পোলিও মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল এই ২৪ অক্টোবর তারিখেই। সেই থেকেই এই তারিখটিকে বিশ্ব পোলিও দিবস হিসেবে পালনের প্রচলন শুরু।