দুই প্রেমিকাকে বিয়ে করে আলোচনায় থাকা পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার লক্ষ্মীদ্বার এলাকার রোহিনী চন্দ্র বর্মন রনির এক স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে।
বিয়ের এক মাস না পেরোতেই তার সংসার ভেঙে গেল। সংসারে ক্রমাগত অশান্তিতে মমতা নামে স্ত্রী এই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন।
গত ১২ মে বিয়ের ২২ দিনের মাথায় অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দুই পরিবার। তবে এ বিষয়ে রনি ও মমতার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মমতার ভাই পলাশ চন্দ্র রায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমার বোনের ওপর মানসিকভাবে তারা নির্যাতন করছিল। বিষয়টি নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করতে চাই না। বোনের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীদার এলাকার যামিনী কান্ত বর্মনের ছেলে রোহিনী চন্দ্র বর্মন রনি। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে মেকানিক্যাল ট্রেনে ডিপ্লোমা করেছেন। পড়ালেখা এখনো বাকি। উত্তর বলরামপুর এলাকার গিরিশ চন্দ্রের মেয়ে ইতি রানীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক তিন বছরের। প্রায় ছয় মাস আগে বোদা উপজেলার তেপুকুরিয়া মন্দিরে গিয়ে গোপনে ইতিকে বিয়েও করেন রনি। এর পাশাপাশি উত্তর লক্ষ্মীদ্বার এলাকার জগেন্দ্রনাথ বর্মনের মেয়ে মমতার সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১২ এপ্রিল রাতে মমতার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তার পরিবারের লোকজন রনিকে আটকে রাখে। পরদিন ওই পরিবার তাদের আদালত ও পুরোহিত দিয়ে বিয়ে দেয়।
এই খবর শুনে ১৩ এপ্রিল সকাল থেকে প্রথম প্রেমিকা ইতি রনির বাড়িতে অবস্থান নিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। দুই দিন পর মমতাসহ রনিকে তার বাড়িতে দিয়ে আসে মমতার পরিবারের লোকজন। এদিকে ইতির অনশন চলতেই থাকে। একপর্যায়ে গত ২০ এপ্রিল রাতে রনির পরিবার বাধ্য হয়ে দুই প্রেমিকার সঙ্গে রনির বিয়ের কাজ সম্পন্ন করে।
এ সময় তিন পরিবারের লোকজনও উপস্থিত ছিল। নানা নাটকীয়তার পর এই বিয়ে সম্পন্ন হওয়ায় তিন পরিবারই ছিল খুশি। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়ে যায়। কিন্তু সেই খুশি বেশি দিন টেকেনি। বিয়ের কয়েক দিন যেতে না যেতেই শুরু হয় সংসারে অশান্তি।
মমতার পরিবারের দাবি, মমতাকে তাড়াতে উঠেপড়ে লাগে ইতিসহ রনির পরিবারের সদস্যরা। মানসিকভাবে তাকে নির্যাতন করা হতো। একপর্যায়ে মমতার সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় দুই পরিবার। গত ১২ মে রনির সঙ্গে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটে মমতার।
রনির বাবা যামিনী কান্ত বর্মন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মমতা স্বেচ্ছায় আমার ছেলেকে ডিভোর্স দিয়েছে। এতে আমরা অমত করিনি।
বলরামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, লোকমুখে শুনেছি, মেয়েটা নাকি নিজেই ছেলেটিকে ডিভোর্স দিয়েছে।সূত্র -দেশ রূপান্তর